লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে ভারতজুড়ে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে দেশটির অন্যতম বৃহৎ দল কংগ্রেস। তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে আজ বুধবার ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ নামে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, টানা পাঁচ মাস ধরে ৩৫০০ কিলোমিটারের বেশি এই পদযাত্রা আসলে নিজের ভাবমূর্তি থেকে ‘পার্ট টাইম’ রাজনীতিকের তকমা ঝেড়ে ফেলার পরীক্ষা। কারণ পুরোটা না-হলেও বেশিরভাগ রাস্তাই রাহুল নিজে হাঁটবেন বলে কংগ্রেস নেতাদের দাবি।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাহুলের ঘোষণা অনুযায়ী, এই যাত্রার উদ্দেশ্য হল বিজেপি-আরএসএসের বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ, ঐক্যের মতাদর্শ তুলে ধরা। কিন্তু তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে এই যাত্রা শুরু হলেও অধিকাংশ বিজেপি শাসিত রাজ্যের মধ্যে দিয়েই এই যাত্রা যাবে না। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের গুজরাটেও ঢুকবে না এই যাত্রা। তবে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশকে সামান্য ছুঁয়ে যাবে।
মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র— শুধুমাত্র এই চারটি বিজেপি বা বিজেপি জোট শাসিত রাজ্যেই রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা পৌঁছাবে। তাতে কি দেশ জুড়ে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি বিরোধী হাওয়া উঠবে? কংগ্রেসের পালে হাওয়া লাগবে? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের দাবি, ভারত জোড়ো যাত্রা দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনবে, কংগ্রেসের জন্যও সঞ্জীবনী হয়ে উঠবে।
বুধবার রাহুল এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমরা এক ইতিবাচক রাজনীতির সূচনা করছি। আমরা আপনাদের কথা শুনতে চাই। আপনাদের সমস্যার সমাধান করতে চাই। আমাদের প্রিয় দেশকে জুড়তে চাই।
আজ সকালে প্রয়াত রাজীব গান্ধীর স্মৃতিস্থল শ্রীপেরুম্বুদুরে প্রার্থনা সভায় যোগ দেন রাহুল। এখানেই রাজীব এলটিটিই-র হামলায় নিহত হয়েছিলেন। এর পরে কন্যাকুমারীতে বিবেকানন্দ মেমোরিয়াল, কামরাজ, থিরুভাল্লুভার মেমোরিয়াল হয়ে ফের মহাত্মা গান্ধী মণ্ডপে প্রার্থনা সেরে বিকেলে পদযাত্রা শুরু হবে। তার আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন রাহুলের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেবেন। সন্ধ্যায় জনসভার পরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পদযাত্রা শুরু হবে।
কংগ্রেসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাহুলের যাত্রা তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব হয়ে জম্মুতে পৌঁছবে। কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, সব থেকে সহজ রাস্তা বেছে নিতেই গুজরাটকে বাদ দিতে হয়েছে। তবে উত্তরপ্রদেশ-সহ সব রাজ্যেই ভারত জোড়ো যাত্রা হবে।