৪৩ বছর পর ফুলন দেবীর সেই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪, ০৪:১৩ এএম

৪৩ বছর পর ফুলন দেবীর সেই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা

ফুলন দেবী

আশির দশকে ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে ২০ জনকে হত্যা করেছিলেন ‘দস্যুরানী’ ফুলন দেবী এবং তার দলের সদস্যরা। সেই হত্যাকাণ্ডের ৪৩ বছর পর সাজা ঘোষণা করল ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরের একটি আদালত।

ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমানে দুজন বেঁচে আছেন। তার মধ্যে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কানপুরের আদালত। এছাড়া, প্রমাণের অভাবে অন্যজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রায় ঘোষণা করেন উত্তর প্রদেশের কানপুর জেলার একটি আদালত।

১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর প্রদেশের বেহমাই গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। ঠাকুর সম্প্রদায়ের উচ্চবর্ণের পুরুষদের হাতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ফুলন দেবী। তার বদলা নিতে বেহমাই নামক গ্রামে ঠাকুর সম্প্রদায়ের ২০ জন পুরুষকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলেন ফুলন দেবী ও তার দলের সদস্যরা।

সেই ঘটনায় গোটা ভারতে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভিপি সিং। ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। তবে বিচার চলাকালীন অভিযুক্তদের ৩২ জনই মারা গেছেন।

জীবিত দুই আসামির মধ্যে একজনের নাম শ্যামবাবু কেওয়াত ও অন্যজন বিশ্বনাথ। প্রথম জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন কানপুরের দেহাতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক অমিত মালব্য ও দ্বিতীয় জনকে বেকসুর খালাস হয়েছে। এই মামলা চলাকালীন ২৮ জন সাক্ষী মারা যান। ২০১২ সালে কানপুরের ওই আদালতে চার্জ গঠন হয়েছিল।
পরে একটি সাধারণ ক্ষমা প্রকল্পের অধীনে হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর মধ্যপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ফুলন। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। সে বছর সমাজবাদী পার্টির তৎকালীন প্রধান ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়েম সিং যাদবের আদেশে ফুলন দেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

১৯৯৪ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেন। কোনো ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হলেও তিনি উত্তর প্রদেশের মির্জাপুরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নিজ প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন ফুলন দেবী।

২০০১ সালের ২৫ জুলাই তাকে নয়াদিল্লির সরকারি বাসভবনের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়। বেহমাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

Link copied!