জুলাই ১৭, ২০২৫, ১২:৩০ পিএম
হামলায় কাওয়ালি শিল্পী আহমেদ হুসেইন সাবরিসহ তিনজন নিহত হন। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে যাত্রীবাহী বাসে অতর্কিত হামলায় করাচিভিত্তিক সাবরি কাওয়াল গোষ্ঠীর দুই কাওয়ালি গায়কসহ তিন সঙ্গীত শিল্পী নিহত হয়েছেন।
বুধবার বেলুচিস্তানের কালাত শহরের কাছে এই হামলায় আরও ১৩ জন আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, কালাত জেলার এসএসপি সাজ্জাদ পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনকে জানিয়েছেন, কালাতে বাসে গুলিবর্ষণে যে তিনজন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে বিখ্যাত কাওয়ালি শিল্পী আহমেদ হুসেইন সাবরি ও তার ছেলে আহমেদ রাজা সাবরি আছেন। তারা তাদের দলের অন্যান্য শিল্পীদের সঙ্গে ওই বাসে করে বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা যাচ্ছিলেন।
করাচির বিখ্যাত কাওয়ালি শিল্পী মজিদ আলি সাবরি ফোনে ডনকে বলেন, “এই সশস্ত্র হামলায় আমার ভাই, ভাতিজা ও এক সঙ্গীত শিল্পী নিহত হয়েছেন।”
তিনি জানান, তার ভাই, ভাতিজা ও অন্য সঙ্গীত শিল্পীর একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গাইতে কোয়েটা যাচ্ছিলেন।
“আহতদের মধ্যে আমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন ও সঙ্গীত শিল্পীরা রয়েছেন,” ফোনে বলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তারও কোয়েটা যাওয়ার কথা ছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোয়েটা-করাচি মহাসড়কের নেমারঘ এলাকায় সশস্ত্র হামলাকারীরা দুই দিক থেকে বাসটিতে অতর্কিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে। হামলা চালাতে তারা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, “তারা প্রথমে কোচটি থামায় তারপর নির্বিচারে গুলি করে।”
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের অধিকাংশই করাচিভিত্তিক শিল্পী গোষ্ঠীটির সদস্য। হামলায় বাসটির চালকও আহত হয়েছেন।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের শরীরে একাধিক গুলির ক্ষত ছিল, অধিকাংশই মাথা ও শরীরের উপরের অংশে। গুরুতর আহত কয়েকজনকে কোয়েটার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কোয়েটার বাসিন্দা ইমতিয়াজ লেহরি এই কাওয়ালি দলটিকে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে উড়োজাহাজে করে মজিদ সাবরির কোয়েটা আসার কথা ছিল, তাদের জন্য একটি হোটেল রুমও ভাড়া করে রাখা হয়েছিল।
বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাদিহ রিন্ড ঘটনা, হতাহতের সংখ্যা ও স্থান নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী, জেলা প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দলগুলো অবিলম্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায়। একটি তল্লাশি অভিযান শুরু করে হামলাকারীদের তাড়া করা হচ্ছে।”
একইদিন পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচিস্তানের আওয়ারান জেলায় তিনি ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম। নিহতরা ভারত-সমর্থিত ছায়া গোষ্ঠী ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ এর সদস্য বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। এই অভিযানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মেজর পদবীর কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা।