শরিয়তে সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় হলো ঈমান-আকিদা। এরপর যথাক্রমে ইবাদত, মুআমালাত ও মুআশারাতের স্থান। তবে সবকটি বিষয় পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। যেমন—রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যার আমানতদারি নেই, তার ঈমান নেই।
উপার্জনের ক্ষেত্রে ইসলাম সবসময় হালাল-হারামে গুরুত্ব দিতে বলেছে। কারণ, হারাম পন্থায় উপার্জন করলে বরকত নষ্ট হয়ে যায়। যার উপার্জন হারাম তার সারা জীবনই ধ্বংসের মুখে। কারণ, তার খাবার-দাবার, পোশাক সবই হারাম উপার্জনের এমনকি সন্তান-সন্ততির শরীরও হারাম খাবারে পূর্ণ। এক কথায় তার পুরো জীবন প্রতিষ্ঠিত হারামের ওপর। এমন ব্যক্তি অঢেল সম্পদ উর্পাজন করলেও বরকত থেকে বঞ্চিত।
কেবল সৎকাজই মন্দকাজকে নির্মূল করে। খারাপ আমল কখনও অন্য বদ আমলকে নির্মূল করতে পারে না। এটি ইসলামের সুস্পষ্ট ঘোষণা। অর্থাৎ আমরা দান-সদকা, যাকাত-ফিতরা আদায় করি যাতে আমাদের পাপমোচন হয় এবং সম্পদ পবিত্র হয়। কিন্তু এ কাজ পাপের পথে অর্জিত সম্পদ দ্বারা সম্ভব নয়। কারণ অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করাই একটি পাপ, সুতরাং সেই পাপের মাধ্যমে অন্য পাপ মাফ হতে পারে না। তেমনই অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ অপবিত্র, সুতরাং তা দ্বারা নিজের সম্পদ পবিত্র করাও অসম্ভব।
তাই হালাল উপার্জনে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, এতে রয়েছে বরকত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে থাকে তাকে এর মধ্যে বরকত দেওয়া হয়।”
অপর এক হাদিসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তায়ালা কেবল পবিত্র বস্তুই কবুল করেন। যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে এক মুষ্টি খেজুরও দান করে, আল্লাহ তা নিজ হাতে গ্রহণ করেন। এরপর তা ওই ব্যক্তির জন্য পরিচর্যা করতে থাকেন—যেমন তোমাদের কেউ উটের বাচ্চার পরিচর্যা করে। ওই সামান্য পরিমাণ খেজুর বাড়তে বাড়তে এক সময় পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়।”
হাদিসের মাধ্যমে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, ইসলাম হারাম উপায়ে উপার্জনের কোনও স্থান নেই এবং একে বৈধতা দেওয়ার কোনও উপায় নেই। তবে কেউ যদি অবৈধভাবে উপার্জন করে ফেলে তাহলে তার জন্য এই সম্পদ নিজের কাছে রাখার অনুমতি নেই, প্রকৃত হকদারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। হকদারের খোঁজ না পেলে তা দান-সদকার নিয়ত না করে জনকল্যাণে ব্যয় করে দিতে হবে। এতে ওই ব্যক্তির কোনও সওয়াব হবে না। কারণ অবৈধ আয়ে ভালো কাজ করলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না।