ওআইসির সিএফএম বৈঠক: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে প্রস্তাব গৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৪, ২০২২, ০৫:৫৩ পিএম

ওআইসির সিএফএম বৈঠক: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে প্রস্তাব গৃহীত

ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পরিষদে (সিএফএম) ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। মিয়ানমারের ওপর অব্যাহত চাপ বজায় রাখতে ওই প্রস্তাবটি আনা হয়। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ‘ঐক্য, ন্যায় ও উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে ২২-২৩ মার্চ ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ৪৮তম সিএফএম বৈঠকে ৫ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

এসময় মাসুদ তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সদস্য রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালানায় ওআইসির তহবিলে স্বেচ্ছায় অবদান রাখার জন্য সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এসময় পররাষ্ট্র সচিব ওআইসির সঙ্গে বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন যা সবসময় শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের নীতিতে পরিচালিত হয়েছে।

করোনার টিকার ন্যায্য বণ্টন ও টিকা প্রযুক্তি হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিচালনার বিষয়টি তুলে ধরেন।

মাসুদ ফিলিস্তিনের জন্য শান্তি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা, ইসলামোফোবিয়ার নিন্দা জ্ঞাপন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-অপরাধ, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন, উগ্রবাদ ও সহিংস চরমপন্থাসহ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ বন্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে সৌদি আরব ও পাকিস্তানে বাংলাদেশের দূত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে যোগ দেন।

মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত জবাবদিহিতা বিষয়ক ওআইসি অ্যাডহক মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির একটি উন্মুক্ত বৈঠকও সিএফএম চলাকালে অনুষ্ঠিত হয়।

পররাষ্ট্র সচিব মোমেন ‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে ইসলামিক বিশ্বের ভূমিকা’ শীর্ষক অধিবেশনে বক্তব্য দেন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দিয়েছে ও তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের পরে সেখানে এসে পৌঁছেছে।

এ ঘটনাকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নির্মূলের জলজ্যান্ত উদাহরণ’ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা একে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। গত সাড়ে চার বছরে একজন রোহিঙ্গাও দেশে ফেরত যায়নি। 

Link copied!