দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২৭, ২০২২, ০৫:৪৭ এএম

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলো যেখানে মূল্যস্ফীতি, উচ্চ সূদহার ও মুদ্রার অবচয়সহ নানা সঙ্কট মোকাবিলা করছে ঠিক তখন  বাংলাদেশের অর্থনীতি অধিকতর স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতি বিষয়ক ম্যাগাজিন নিক্কেই এশিয়া’র প্রতিবেদনে।

ম্যাগাজিনটির সাম্প্রতিক প্রকাশিত ‘বিয়োন্ড শ্রীলংকা ইকোনমিক সাইক্লোন বিয়ারস ডাউন অন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদনে শ্রীলংকা, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল,পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মুদ্রাস্ফীতি, উচ্চ সুদের হার এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নসহ অর্থনৈতিক সঙ্কট অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর যখন ‘ত্রাহি’ অবস্থা ঠিক তখন বাংলাদেশে একটি পুরোপুরি ব্যতিক্রম চিত্র দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ তার নিজের অবস্থান ঠিক রেখে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও  প্রতিবেদনে মূল্যায়ন করা হয়।

নিক্কেইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়,বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া কঠিন সিদ্ধান্তের কারণে সফলভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বৈদেশিক ঋণকে অধিকতর টেকসই পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশ রাজস্ব আদায়ের সুষম গতি ধরে রাখতে সফল হয়েছে উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রথম দুই ঢেউয়ের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য বিষয়ে খুব কড়াকড়ি আরোপ করেনি দেশটি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মানুষকে কাজে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমেও দেশটি লাভবান হয়েছে। সতর্ক আর্থিক ব্যবস্থাপনার কারণেই বাংলাদেশ কোভিড-বিপর্যয় থেকে অর্থনীতিকে রক্ষা করতে পেরেছে  বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

নিক্কেইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদেশিক ঋণ ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক ধাক্কায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছে মালদ্বীপের অর্থনীতি। দেশটির  ঋণ ও জিডিপির অনুপাত শতভাগ ছাড়িয়ে গেছে।

আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও দূরদর্শিতার অভাব এবং অপরিকল্পিত মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে শ্রীলংকা স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড়ো অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিন পার করছে। পাকিস্তানও শ্রীলংকার পথে হাঁটছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তানে ঋণ ও জিডিপির অনুপাত ছিল ৩৫ ভাগ। পাকিস্তানও ভারত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলংকার মতো অস্থিতিশীল রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

নিক্কেইয়েূর প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, বিশ্বের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ ভারতও মুদ্রাস্ফিতি থেকে মুক্ত নয়। চলতি বছরের এপ্রিলে ভারতে খুরচা মূল্য প্রায় ৮ ভাগ বেড়েছে। এতোসব সঙ্কটের মধ্যেও বাংলাদেশ কেবলমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।  

এতোসব সঙ্কটের মধ্যে বাংলাদেশ শুধুমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত ও দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেকে ব্যতিক্রম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

Link copied!