নিউমার্কেটে নৃশংসতায় ১২ জন শনাক্ত, শুরু হয়েছে গ্রেপ্তার অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ২৫, ২০২২, ০৩:০৭ এএম

নিউমার্কেটে নৃশংসতায় ১২ জন শনাক্ত, শুরু হয়েছে গ্রেপ্তার অভিযান

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে পড়ে ডেলিভারিম্যান মো. নাহিদ মিয়া ও দোকান কর্মচারি মো. মোরসালিন নিহত হন। নাহিদকে হেলমেটধারী তরুণেরা আঘাত করেন, যার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব ছবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গণমাধ্যমে পাওয়া ছবি এখন বিশ্লেষণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ পর্যন্ত তাঁরা সহিংসতায় ১২ জনের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। তবে তাঁরা আরও যাচাই বাছাই করে ধীরে ধীরে গ্রেপ্তার অভিযান জারি রাখবে। ইতিমধ্যে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারও করেছে তাঁরা। 

শুরু হয়েছে গ্রেফতার অভিযান

নাহিদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা কালো হেলমেট ও ধূসর টি-শার্ট পরা শিক্ষার্থী ইমন বলে জানাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাঁকে খুঁজতে রবিবার বিকেলে কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসেও গিয়েছিল র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জহির হাসান জুয়েল নামে এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরে নিয়ে যায়। জুয়েল সর্বশেষ ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তাঁকে আটকের সময় দুইটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়।

নাহিদ হত্যা মামলার তদন্তের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, সংঘর্ষে নির্দিষ্ট দোষীদের খুঁজে বের করা স্পর্শকাতর একটি বিষয়। তাই সময় নিয়ে প্রমাণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার কার্যক্রম চালানো হবে। আমরা শতভাগ নিশ্চিত হয়েই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনব।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু এখন ঈদের সময় তাই ব্যবসায়ীদের সাথে যেন শিক্ষার্থীরা এই গ্রেফতার ইস্যু নিয়ে আর ঝামেলা না করে এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছি।

ইমনকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নাহিদের পরিবার নিউ মার্কেট থানায় হত্যা মামলা করার পর এর তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) রমনা বিভাগ। সিসিটিভি ফুটেজসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ও ছবি যাচাই করে নাহিদের হত্যাকারীদের খোঁজার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ইমন ছোরা দিয়ে আঘাত করলেও নাহিদকে প্রথম মারধর শুরু করেন কাইয়্যুম ও সুজন ইসলাম নামে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই কর্মী। নাহিদকে প্রথম মারধর শুরু করার সময়ের দুজনকেও শনাক্ত করা গেছে। একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নীল রঙের মাঝে সাদা চেকের টি-শার্ট পরে সংঘর্ষে অংশ নেন কাইয়্যুম। তিনি নাহিদকে রড দিয়ে আঘাত করেন। মাথায় হেলমেট না থাকায় কাইয়্যুমকে সহজেই শনাক্ত করা গেছে।

আর হলুদ হেলমেট ও লাল গেঞ্জি পরা সুজন ইসলাম নাহিদকে ইটের আঘাত ও লাথি মেরে আহত করেন। পরে ইমন নাহিদকে কোপানো শুরু করলে এই সুজনই তাকে চড় মেরে সরিয়ে দেন। সুজন ঢাকা কলেজের ২০১৩ -২০১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা।

তবে মামলা হওয়ার পরই ইমন গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানায় ঢাকা কলেজের আন্তর্জাতিক হলের শিক্ষার্থীরা।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়ও শিক্ষার্থীরা জড়িত

নূরজাহান মার্কেটের একটি দোকান ও নিউ চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার অগ্নিকাণ্ডেও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়িত বলে বিভিন্ন ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আইনশৃঙ্খলা জানায়। ঢাকা কলেজের বিপরীত দিকের নিউওয়ে পেট্রল পাম্প ও নিজেদের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রল সংগ্রহ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। তা দিয়ে পেট্রলবোমা বানিয়ে বিভিন্ন মার্কেট ও ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। এই গ্রুপগুলোর সাথে সাধারণ ছাত্ররাও যোগ দেন সংঘর্ষে।

Link copied!