নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন হবে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১৩, ২০২২, ০২:৫৮ পিএম

নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন হবে

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গা তাদের নিজ দেশে ফিরতে চায়। তবে নির্যাতন ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য সেনাবাহিনীকে জবাবদিহিতার আওতায় না আনতে পারলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ওইসব রোহিঙ্গাদের  মনে আতঙ্ক ও ভয় এখনও বিরাজ করছে। আর হত্যা, ধর্ষণ. নির্যাতণসহ বিভিন্ন অপরাধে সেনাবাহিনীকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সুযোগ এখনও খুবই সীমিত। এমনই তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘ গঠিত দ্য ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার’র (আইআইএমএম) বার্ষিক প্রতিবেদনে। আসছে সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মানবিাধিকার পরিষদের অধিবেশনে আইআইএমএম’র প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে।

আইআইএমএম’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তারা দুেই শতাধিক উৎস থেকে ৩০ লাখের বেশি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। এসব উৎসবের মধ্যে রয়েছে সাক্ষাৎকারমূলক জবানবন্দি, ভিডিও, আলোকচিত্র, ভূস্থানিক ছবি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এসব তথ্য উপাত্ত এরই মধ্যে  আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে), আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলির দপ্তর, আর্জেন্টিনার আদালতকে সরবরাহ করা শুরু করেছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়,  সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত থেকে ইঙ্গিত মিলছে, মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্রগোষ্ঠী শিশুদের ধর্ষণ, যৌন সহিংসতাসহ অন্যান্য অপরাধ করেছে। মা-বাবাকে না পেয়ে শিশুদের নির্যাতন ও আটক করা হয়েছে; এমনকি শিশুদের জোর করে সশস্ত্রগোষ্ঠীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এ বছর আগস্টে আইআইএমএম তার কার্যক্রমের তিন বছর পূর্ণ করছে। অন্যদিকে এই আগস্টেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর নির্মূল অভিযানের পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ২০১৭ সালের ওই অভিযানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধ ধারাবাহিকভাবেই সংঘটিত হচ্ছে। চলমান সংঘাতের বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে নারী ও শিশুদের ওপর। মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ জোরালো হচ্ছে।

‘দুঃখজনকভাবে রোহিঙ্গা ও মিয়ানমারের জনগণের জন্য দায়মুক্তির অবসান এবং সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি সীমিতই রয়ে গেছে। ’ বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

 

আইআইএমএমের প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান বলেছেন, “নারী ও শিশুদের সঙ্গে অপরাধ সবচেয়ে গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোর অন্যতম। তবে ঐতিহাসিকভাবে এসব অপরাধের তথ্য জানাজানি কম হয়। তদন্তও কম হয়।”

তিনি আরও বলেন, ‘আইআইএমএমের সদস্যরা এসব অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও তদন্ত করছে। অপরাধীদের জানা উচিত, তারা পার পাবে না। তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিচার তাদের হবেই।”

আইআইএমএম-প্রধান আরও বলেন, “রোহিঙ্গারা নিরাপদে সম্মানজনকভাবে ফিরে যেতে চায়, তবে নির্যাতন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযুক্তদের বিচার না হলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো খুবই কঠিন হবে।

Link copied!