মোনাজাতে ‘ভুল করা’ সেই হুজুর পদ হারালেন আ. লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ১৮, ২০২১, ১১:২৬ পিএম

মোনাজাতে ‘ভুল করা’ সেই হুজুর পদ হারালেন আ. লীগের

দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের ‘জান্নাতবাসী’ করতে দোয়া করা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাককে।

রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের কমিটিতে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পদে থাকা আবদুর রাজ্জাক বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর প্রথম প্রহরে মোনাজাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের জান্নাত কামনা করে দোয়া করেন।

পরে তার মোনাজাত করার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসার পর পৌর আওয়ামী লীগ জরুরি সভা ডেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়।

দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর, আবদুর রাজ্জাক প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। মুখ ফসকে এমন বাক্য বের হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এর আগে, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে তাহেরপুর পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌর আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনীতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। আওয়ামী লীগের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহেরপুর পৌরসভার আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাজ্জাককে।

মোনাজাতসহ ওই রাতের শহীদ মিনারের কর্মসূচি ‘বাগমারা টাইমস’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এসময় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া পরিচালনার একপর্যায়ে মাওলানা আবদুর রাজ্জাক বলেন, “স্বাধীনতার জনক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা হত্যা করেছে, মানুষ নয় অমানুষ, মাবুদ। জাতির জনক ও তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছে, তাদের সকলকে তুমি জান্নাত দান করে দিও আল্লাহ।”

ওই মোনাজাতের ভিডিও শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) ফেসবুক ছাড়াও মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ভিডিওর নিচে মন্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পড়তে থাকে। অনেকে এ অপরাধকে ক্ষমার অযোগ্য বলে মন্তব্য করেন। অনেকে এ কাজের প্রতিবাদ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে অনেকে এটাকে স্রেফ ভুল হিসেবে মন্তব্য করেন। তারা জানান, মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, এই ভুল হতে শিক্ষা নিতে হবে। অনেকে বলেছেন, মোনাজাত পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবদুর রাজ্জাক দোয়া পরিচালনা করার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য একটি বাক্য উচ্চারণ করেছেন। এ জন্য আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভা ডেকে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য উপজেলা কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।

Link copied!