বেটা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩, ০৭:২৮ পিএম
কে হবেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি?- এ নিয়ে কয়েক মাস ধরেই চলছিল জল্পনা-কল্পনা। সেসবের অবসান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগ দেখালো চমক। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলটির মনোনয়ন পেলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার আইনজীবী মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নির্বাচন কমিশনে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
এরপর সাংবাদিকদের একের পর এক অনুরোধের মধ্যে তিনি শুরু একটি বাক্য উচ্চারণ করে বলেন, ‘সবই আল্লাহর ইচ্ছা।’
জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আর কোনো দল থেকে প্রার্থী না থাকলে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুই হবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার শেষ দিন।
সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র বাছাই হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় দেয়া হবে। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদ সদস্যদের থেকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোট নেওয়া হবে।
৩৫০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বর্তমানে আওয়ামী লীগের আছে ৩০৫টি এবং প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ২৭টি। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৪টি আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৩টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ এবং গণফোরামের ২টি করে, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) একটি করে আসন রয়েছে। বাকি ৪টি আসনে রয়েছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য।
উল্লেখ্য, আগামী ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। গত ২৫ জানুয়ারি ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, তার আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে নতুন কাউকে দেখা যাবে তার জায়গায়। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ১৮তম ব্যক্তি হিসেবে দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন মো. সাহাবুদ্দিন আহমদ চুপ্পু।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যেই ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন মো. সাহাবুদ্দিন আহমদ চুপ্পু। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল।
উল্লেখ্য, পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর জন্ম ১৯৪৯ সালে। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হয়। যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে কমিশন’ গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য।
