হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ট্রাম্পের এই জয়ে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে।
চলুন জেনে নেই ঠিক কি কি কারনে ট্রাম্প জয় পেলেন।
অভিবাসন নীতি
ট্রাম্পের উত্থানের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ অবশ্যই অভিবাসন নীতি। অবৈধভাবে আমেরিকায় বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে শুরু থেকে সরব ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগ ওঠে বাইডেনের শাসনে আমেরিকায় অনুপ্রবেশ আরও মাত্রাছাড়া আকার নিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারেও বার বার এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী। ট্রাম্প তার প্রচারে সাম্প্রতিক সময়ে নৈরাজ্য ও চাকরির সংকট মোকাবেলায় অভিবাসন নীতির মাধ্যমে দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন।
দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফিতী অনেকে বেড়েছে। খাদ্যমূল্য স্ফিতী স্টেট ভেদে গত ৪ বছরে ৩০ থেকে ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে কমলা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন এই পরিস্থিতির দায় ট্রাম্প সরাসরি তাকেই দেয়। ট্রাম্পের ‘স্ট্রং ম্যান’ ভাবমূর্তি আরও বেশি জনপ্রিয়তা এনে দেয়। করোনা মহামারির পর থেকে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি চলছে আমেরিকায়। নির্বাচনী প্রচারে বার বার এই ইস্যুকে তুলে ধরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুর্বল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কমলা হ্যারিস জনগণকে আশ্বস্ত করলেও মন ভেজেনি জনগণের। ফলাফলের ট্রেন্ড বলছে, এই ইস্যুতে পরিবর্তন আনতে ট্রাম্পকে সুযোগ দিতে চান তাঁরা।
শান্তির পররাষ্ট্রনীতি
মধ্যপ্রাচ্য ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বার বার বাইডেন সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন ও ইসরায়েলকে শত শতকোটি ডলারের অর্থসহায়তা ও অস্ত্র দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ আমেরিকার বেশিরভাগ মানুষ। অন্যদিকে, বাইডেন সরকারের এই নীতির সমালোচনা করে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন বিশ্বে বড় কোনো যুদ্ধ বাধেনি। ফলে মার্কিন অর্থনীতিকেও চাপের মুখে পড়তে হয়নি। বাইডেনের দুর্বল বিদেশনীতিও ট্রাম্পের ক্ষমতায়ণের অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের মাত্র ১০ দিন আগে জো রোগানের সাথে পডকাস্টে তার বিভিন্ন ভিশন ও তথ্য তুলে ধরেন। ফলে স্টেটে স্টেটে না ঘুরে এই ধরনের প্রচারণা তাকে দ্রুত সময়ে জনগণের কাছে পৌছাতে সাহায্য করে।
এছাড়া ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে তাকে সমর্থন দেয়। এছাড়া জ্যাক পল সহ আরও অনেক ইনফ্লুয়েন্সারের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প জেন জিদের সমর্থন পেয়েছেন।
আরব-মুসলিমদের ভোট
নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগেও ট্রাম্প মিসিগানে আরব মুসলিমদের সাথে একান্ত প্রচারণা করে। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাম্পেইনে ট্রাম্প আর—মুসলমানদের কথা বিশেষ ভাবে বলেছেন। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় আক্রমণের ফলে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধেও আরব-মুসলমানদের ট্রাম্পের প্রতি ভোট দিতে উৎসাহ যোগায়।