জুন ৯, ২০২৩, ০৭:৩৪ পিএম
কম্বোডিয়ায় ফিফা প্রীতি ম্যাচ এবং সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছেন জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। শুক্রবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রিয় শিষ্যদের তালিকা প্রকাশ করেন। যাদের নিয়ে লড়তে চান ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠেয় সাফের মতো কঠিন লড়াইয়ে। ঘোষিত দলে নেই প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা এলিটা কিংসলে, শাহরিয়ার ইমন ও সাজ্জাদ। আর ভিসান না পাওয়ায় আজ দুপুরে কম্বোডিয়ার পথে রওয়ানা হওয়া দলের সঙ্গে যেতে পারছেন না বিশ্বনাথ ঘোষ ও ঈসা ফয়সাল। তাই এই দুইজনকে ঢাকায় রেখেই বাকি ২১ জনকে নিয়ে যাচ্ছেন কোচ। রোববার ওই দুইজনের ভিসা পাওয়ার প্রত্যাশা করছে বাফুফে। ভিসা পেলে তাদেরকে পরবর্তীতে কম্বোডিয়া পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। কম্বোডিয়ায় ১৫ জুন স্বাগতিকদের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এর আগে ১২ জুন বাংলাদেশ একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে কম্বোডিয়া প্রিমিয়ার লিগের দল টিফি আর্মি ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে।
ঘরোয়া ফুটবলের চলমান প্রিমিয়ার লিগে দেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল আবাহনীর ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসলের। ৯ গোল করলেও সাফে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াডে এলিটা কিংসলেকে রাখেননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কথা, ‘যারা দলে নেই তারাও প্রস্তুতি ভালো নিয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ চোটের কারণে বাদ পড়েছে। এই পরিস্থিতি আমাদের সামাল দিতে হয়েছে। যারা জায়গা পায়নি, তারাও কঠোর পরিশ্রম করেছে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, যোগ্যদের নিয়ে আমরা দল গুছিয়েছি।’ এবারই প্রথম টুর্নামেন্টটিতে সাফের বাইরের দুটি দেশ অংশ নিচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে লেবানন। আট দলের মধ্যে র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে ভালো এই দেশটি। লেবানন বি-গ্রুপের সেরা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই বাংলাদেশ গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা হয়ে পরবর্তী রাউন্ডের জন্য বিকল্প ভাবনা তৈরি করেছে বলে জানান কোচ হাভিয়ের। তার কথায়, ‘লেবানন আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। আমরা মালদ্বীপ এবং ভুটানকে নির্ধারণ করেছি আমাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য।’ তিনি যোগ করেন, ‘সাফে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা মালদ্বীপকে হারাতে পারিনি ঠিক। তবে শ্রীলংকায় চার জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ জিতেছিল।’
প্রায় দেড় যুগ ধরেই সাফের ফাইনালে খেলতে পারছে না পুরুষ দল। গেল বছর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাবিনারা। এছাড়া সাফের অন্য আসরগুলোতেও লাল সবুজের মেয়েরা শিরোপা জিতছে অহরহ। নারীদের এমন ধারাবাহিক সাফল্য এবং নানা সমালোচনায় জর্জরিত বাফুফে জামালদের জন্য চাপ তৈরি করে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘চাপ তো মিডিয়ার।’ পরে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি যোগ করেন, ‘মিডিয়া এবং সমর্থকরা আরও অনেকে অনেক বিষয় আলোচনা ও সমালোচনা করবে। আমরা ফুটবলাররা সেদিকে মনোযোগ দেই না। আমরা নিজেদের খেলাতেই মনোযোগ রাখি।’ ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় দলের সঙ্গে খেললেও সাফের গ্রুপ পর্বের গন্ডি পেরুতে পারেননি জামাল ভূঁইয়া। এ বিষয়ে তার কথা, ‘কেবল আমি নই, সবাই চায় বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করতে।’ সাফের গেল আসর নিয়ে জামাল বলেন, ‘গত বছর আমরা শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েছি। কিছু দিন আগে সহ-সভাপতি (কাজী নাবিল) বলেছেন শেষ মুহূর্তে স্টুপিড গোল হজমে আমরা হেরেছি। এটা সত্যি।’ শেষে তিনি বলেন, ‘এই দলে আমি ও সোহেল বেশি অভিজ্ঞ। গত সাফ এবং এই সাফের দল একই।’ পরে নিজেদের আন্ডারডগ হিসেবেই অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের নিয়ে কিন্তু আলোচনা নেই। কারন আমরা আন্ডারডগ হিসেবেই যাচ্ছি।’
সাফের চূড়ান্ত দল: গোলকিপার- আনিসুর রহমান জিকো, মিতুল মারমা, শহিদুল আলম সোহেল, ডিফেন্ডার- কাজী তারিক রায়হান, বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মন, ইশা ফয়সাল, রহমত মিয়া, আলমগীর মোল্লা, মেহেদি হাসান, মিডফিল্ডার- সোহেল রানা-১, মজিবুর রহমান জনি, সোহেল রানা-২, রবিউল হাসান, জামাল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হৃদয়, শেখ মোরসালিন এবং ফরোয়ার্ড- রাকিব হোসেন, সুমন রেজা, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, রফিকুল ইসলাম ও আমিনুর রহমান সজীব।