ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে এলেন ৮ বাঙালি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩, ১১:০৭ পিএম

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে এলেন ৮ বাঙালি

অমর একুশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভারত থেকে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে আসা একদল বাঙালি। ওই দলে আছেন শৈবাল ব্যানার্জি নামে এক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীসহ আটজন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি থেকে তাঁরা সাইকেল চালিয়ে ঢাকায় এসেছেন। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে ঢাকায় পৌঁছান তাঁরা। পরে সকালে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এই আট বাঙালি।

ভারতের হুগলি জেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞানের শিক্ষক শৈবাল ব্যানার্জি। তাঁর সাথে এসেছেন স্ত্রী মহুয়া ব্যানার্জি, বন্ধু শ্রীকান্ত মণ্ডল, প্রশান্ত সরকার, প্রণব কুমার মাইতি, রমজান আলী, রঞ্জন দাস ও সত্যব্রত ভাণ্ডারী।

হুগলির চন্দননগর থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি সাইকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে ছয় দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় রাত কাটান। পরে মঙ্গলবার সকালে হাতে ফুল, মাথায় পতাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান এই আট ভারতী বাঙালি।

শৈবাল ব্যানার্জি বলেন, আমি আগেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকায় এসেছিলাম। এবার আমরা আটজন এসেছি। আমার স্ত্রীও এসেছেন আমার সঙ্গে। আমরা শুধু বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে সাইকেল চালিয়ে এখানে এসেছি। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের কাছে অনেক গর্বের। আমরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি শুধু একুশে ফেব্রুয়ারির কারণেই পেয়েছি। এই দিনে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা না জানালে ভাষার সম্মান অপূর্ণ থেকে যাবে। এই সম্মান জানানোর মাধ্যমেই দুই বাংলার মেলবন্ধন ঘটেছে। দুই বাংলার মধ্যে পার্থক্য শুধু কাঁটাতার। এ ছাড়া আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমাদের ভাষা, চলাফেরা, ব্যবহার ও সংস্কৃতি সবই এক। ভাষাকে ঘিরেই দুই বাংলা মিলেমিশে একসঙ্গে এগিয়ে চলুক। এটাই আমাদের চাওয়া।

তিনি বলেন, বাংলা আমাদের মায়ের ভাষা। সেই ভাষাকে তারা অবহেলা করেছিল। তারা রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে জানতে চায় না। আমরা চাই বাংলা পৃথিবীর এক নম্বর ভাষা হয়ে উঠুক। বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এগিয়ে যাক। কলকাতায় নতুন ছেলেমেয়েরা অনেকেই ঠিকভাবে বাংলা বলতে পারে না। বাবা-মায়েরাও বাংলা শেখাতে চান না। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। ওপার বাংলার মানুষও এ দিনটাতে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। কিন্তু যেহেতু ১৯৫২ সালে ঢাকার রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছিল। তাই এখানকার মতো আবহ ওখানে পাওয়া যায় না। এ কারণেই আমরা ঢাকায় শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।

Link copied!