এপ্রিল ২৯, ২০২৩, ০৫:৩১ পিএম
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় আলোচিত ইজিবাইক চালক শাহাদাতকে ব্রিজ থেকে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে ইজিবাইক চুরির ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. জুয়েল বেপারীসহ (২৭) উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত মো. সাজ্জাদ শেখ (২৩), মো. ইসমাইল হোসেন (২৩), মো. লিমন মাতুব্বর (২১), মো. সোহাগ (২০) ও রোমান শিকদার (১৮)।
রাজধানীর দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় একটি গ্যারেজ থেকে ইজিবাইক ভাড়ায় চালাতেন কদমতলী থানার মদিনাবাগের বাসিন্দা শাহাদাত হাওলাদার (৩০)। গত ২৩ এপ্রিল বিকেল ৪টায় গ্যারেজ থেকে ইজিবাইক নিয়ে যাত্রী আনা-নেওয়া করতে বের হয়। রাতে শাহাদাত বাসায় না ফিরলে তাঁর পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পায়। এতে তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরদিন সকালে অজ্ঞাত একজন ব্যক্তি শাহাদাতের মোবাইল ফোন থেকে কল দিয়ে জানায় মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানাদীন কুচিয়ামোড়া রেলওয়ে ওভারব্রিজের নিচে একটি লাশ পড়ে আছে।
দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাহাদাতের মাথা, মুখ ও কপালে রক্তফোলা জখম অবস্থায় মরদেহ দেখতে পায় শাহাদাতের পরিবারের লোকজন।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে শাহাদাতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করতে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় সিরাজদিখান থানা পুলিশ।
পরে আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল।
ঈদের দিন মাওয়া ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশে ঘণ্টায় ৩২০ টাকা হিসেবে শাহাদাতের ইজিবাইকটি ভাড়া করে ঘুরতে যায় জুয়েল, সাজ্জাদ, লিমন, রোমান, ইসমাইল ও সোহাগ। বেড়ানোর সময় তারা ইজিবাইকটি ছিনতাই করবে বলে পবিকল্পনা করে। কিন্তু ঈদের দিন বলে সেদিন না করে পরের দিন ছিনতাই করার পরিকল্পনা করেন তারা। সে অনুযায়ী ঈদের দিন ১ হাজার ৯০০ টাকা ভাড়া দেয় এবং পরের দিনও তারা ঘুরতে যাবে বলে জুয়েল শাহাদাতের ফোন নম্বর নেয়।
পরদিন শাহাদাতকে কদমতলী লাবনী রেস্টুরেন্টের সামনে ডেকে আনে। সেখান থেকে জুয়েল, সাজ্জাদ ও লিমন ইজিবাইকে উঠে এবং কিছুক্ষণ পর ইসমাইলকে ফোন দিয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কালীগঞ্জের খালপাড় অবস্থান করতে বলে। কালীগঞ্জ এলাকা হতে ইসমাইলকে সাথে নিয়ে তারা মাওয়ার উদ্দেশে রওনা করে। অতঃপর তারা শ্রীনগরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে।
ঘুরাফেরা শেষে ফেরার পথে রাত ১১টায় সিরাজদিখান থানাধীন কুচিয়ামোড়া রেলওয়ে ওভার ব্রিজের ওপর ইজিবাইক থামিয়ে গল্প করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর আশপাশে কোনো লোকজন দেখতে না পেয়ে জুয়েল, সাজ্জাদ, ইসমাইল ও লিমন ইজিবাইক চালক শাহাদাতের মুখ ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি কিলঘুষি মারতে থাকে। মারামারির এক পর্যায়ে শাহাদাত অজ্ঞান হয়ে পড়লে ব্রিজের নিচে ফেলে দিয়ে ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় মৃতের ভাই শহিদুল ইসলাম জসিম (৪০) একটি হত্যা মামলা করেন।