কেন বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, জানালেন প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৩০, ২০২২, ০৮:২৫ পিএম

কেন বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, জানালেন প্রধানমন্ত্রী

ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম আনা জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবে বাংলাদেশের ভোটদানে বিরত থাকার কারণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের উত্তরে দেশের এই অবস্থান তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাশিয়া আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকা যখন সেভেন্থ ফ্লিট পাঠায় পাকিস্তানের পক্ষে, রাশিয়া তখন আমাদের পাশে দাঁড়ায়। কাজেই যারা দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই তাদের পাশে থাকবো। কিন্তু তারা যদি কোনো অন্যায় করে, সেটা আমরা মানবো না। আর আমরা যুদ্ধ চাই না।”

সংসদ নেতা আরও বলেন, “জাতিসংঘে যখন প্রথম প্রস্তাবটি এল, আমরা দেখলাম সেই প্রস্তাবে কোনো মানবাধিকারের কথা নেই। যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা নেই। একটা দেশের বিরুদ্ধে ভোট, সেটা হল রাশিয়া। তখন আমি বললাম, না, এখানে তো আমরা ভোট দেব না। কারণ যুদ্ধ তো একা একা বাঁধে না। উসকানি তো কেউ না কেউ দিচ্ছে। দিয়ে তো বাঁধাল যুদ্ধটা। তাহলে একটা দেশকে নিন্দা করা হবে কেন? সেইজন্য আমরা ভোটদানে বিরত ছিলাম।” শেখ হাসিনা বলেন, “বন্ধুপ্রতীম দেশ হওয়ায় শুধুমাত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রথম প্রস্তাবে বাংলাদেশ ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় প্রস্তাবে মানবতার বিষয় থাকায় বাংলাদেশ ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

দ্বিতীয় প্রস্তাবের প্রসঙ্গ ধরে সরকারপ্রধান বলেন, “ভোট দেওয়ার এখন যে প্রস্তাবটা এসেছে, এই যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে, ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে মানবাধিকারের বিষয়টি ছিল।”

সংসদ নেতা আরও বলেন,  “দ্বিতীয় প্রস্তাবে যেহেতু মানবাধিকারের বিষয়টি রয়েছে, সেজন্য আমরা ভোট দিয়েছি। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যখন একটি দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব- আমরা ভোট দেয়নি। যখন মানবতার বিষয়টি সামনে এসেছে, আমরা ভোট দিয়েছি। আমার মনে হয় এটা একেবারে স্পষ্ট। এটা নিয়ে আর কারও কোনও দ্বিধা থাকা উচিত নয়।”

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর মার্চ মাসের শুরুতে রাশিয়াকে আক্রমণ বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল ১৪১ দেশ। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ ৩৫টি দেশ ওইসময় ভোটদানে বিরত ছিল।

তবে গত ২৪ মার্চ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটের অবসানে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ত্রাণ কার্যক্রমের সুযোগ দিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়ার অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে দেশের এই অবস্থান তুলে ধরেন সংসদ নেতা। 

Link copied!