গণমাধ্যমকর্মী আইন সংশোধন সমন্বয় কমিটি গঠনের সুপারিশ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২২, ২০২৩, ০৬:৫৭ পিএম

গণমাধ্যমকর্মী আইন সংশোধন সমন্বয় কমিটি গঠনের সুপারিশ

গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সংশোধন প্রস্তাবনা তৈরিতে সব অংশীজন ও প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করার সুপারিশ করেছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)। পাশাপাশি দুই মাসের মধ্যে ওই কমিটি আইনের খসড়া সংশোধনে প্রস্তবনা চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে পাঠাবে বলেও জানায় বিজেসি।

বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীতে ডেইলি স্টার ভবনে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন: অংশীজন সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সংলাপে অংশ নেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন( বিএফইউজে), জাতীয় প্রেস ক্লাব, অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স(অ্যাটকো), সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা এবং সাংবাদিকতা পেশার উৎকর্ষ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে গঠিত এডিটরস গিল্ড, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি), টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (টিসিএ) এবং টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র প্রতিনিধিরা।

সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা নানা দিক থেকে ঝুঁকিতে আছেন। সুরক্ষার জায়গাটি দিন দিন দুর্বলতর হচ্ছে। সরকারের প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনটি সংসদে তোলার পর তা পর্যালোচনার জন্য এখন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে রয়েছে। এই আইনটি গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করবে কি-না এবং বিভিন্ন দেশে কী ধরনের আইন রয়েছে তা নিয়ে আলোচনার জন্য অংশীজন সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে।

মোজাম্মেল বাবু বলেন, গণমাধ্যম তো পাটকল কিংবা গার্মেন্টস কারখানা নয়। সে কারণেই আলাদা আইন লাগবে। সংবাদমাধ্যম বলতে পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইন সব এক। আমরা যদি কিউরেটেড মিডিয়া বলি- সম্পদকীয় নীতির অধীনে পরিচালিত কিউরেটেড মিডিয়াকে যদি সংবাদমাধ্যম বলি তাহলে সমস্যা থাকে না।  আইন বড় করবেন তত বিপদে পড়বেন। তাতে করে সো-কল্ড মালিকপক্ষ আইনটা বাতিল করে ফেলবে। ছোট করে জ্ঞানভিত্তিক কিউরেটেড সংবাদ মাধ্যম সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জন্য আইন করে বাকিটা বিধির মধ্যে ছেড়ে দেন। যেগুলো আমরা অর্জন করেছি, সেগুলো তো ছাড়বো না।

তিনি আরও বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন আমরা অর্জন করেছি। মানবাধিকারের যেসব সনদ, নারী অধিকারের যেসব সনদ অর্জন করেছি সেগুলো এই আইনে এমবেডেড থাকবে।তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আওতামুক্ত রাখতে হবে।  আমরা একটি কমিটি গঠন করি, দুই মাসের মধ্যে কাঠামো (সংশোধন খসড়া) দাঁড় করিয়ে দেবে। আমরা মূলত চাই কী? বেতনের প্রোটেকশন ও কালো আইন থেকে প্রোটেকশন। এইটুকু আদায় করতে পারলে…।

মোজাম্মেল বাবু আরও বলেন, “ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, ডেটা সিকিউরিটি আইন থেকে প্রোটেকশন চাই। ৭৪ এর বিশেষ ক্ষমতা আইন আমরা চ্যলেঞ্জ করেছি। পত্রিকা বন্ধ করা যাবে না এটা অর্জন করেছি। পত্রিকা যেমন বন্ধ করা যায় না, তেমনি কোনও গণমাধ্যমই যাতে বন্ধ করা না যায়।”

সংলাপ অনুষ্ঠানে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, এই আইনটা করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। সুতরাং মালিকপক্ষের চিন্তা বাদ রেখে আমরা যদি এক হতে পারি, তাহলে আমরা এটা করতে পারি। এই আইনের খসড়ায় যেখানে যেখানে সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সংশোধন প্রস্তাবে ধারা কমিয়ে বিধিমালা করার প্রস্তাব করতে পারি। সব অংশীজনের সঙ্গে আমরা সংলাপ করবো।

সংলাপ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, একাত্তর টিভির বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফেডেরেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ। সংলাপ অনুষ্ঠানে লিখিত সংশোধন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন একাত্তর টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মিলটন আনেয়ার।

এছাড়া সংলাপ অনুষ্ঠানে এটিএন বাংলার সাবেক বার্তা সম্পাদক মানস ঘোষ এবং একাত্তর টেলিভিশনের চিফ প্ল্যানিং অ্যান্ড কনটেন্ট এডিটর নূর সাফা জুলহাজসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!