জুলাই ১৫, ২০২৩, ০৪:০১ পিএম
কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ সাময়িক বহিষ্কারে খুশি হতে পারেননি নির্যাতনের শিকার ফুলপরী। বরং এতে আরও আতঙ্কিত বোধ করছেন তিনি।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, “তারা আমার ওপর যে পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে, তাতে তাদের এক বছরের শাস্তি কোনোভাবেই হতে পারে না। এতে আমি সন্তুষ্ট না বরং আরও আতঙ্কিত।”
কেন আতঙ্কিত বোধ করছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করে ফুলপরী বলেন, “তারা এক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিরে এসে আমার ওপর প্রতিশোধ নেবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর আমি মনে করি, আমি সঠিক বিচার পাইনি। আমি চাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হোক।”
এর আগে, বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন,“বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে এটা সর্বোচ্চ শাস্তি। এই সময়ে বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস–পরীক্ষাসহ কোনো কিছুতেই অংশ নিতে পারবেন না।”
বহিষ্কার শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী ওরফে অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী- চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। নির্যাতনের ঘটনায় এর আগে পাঁচজনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থীর ভাষ্য, সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁকে নির্যাতন করেন। এ সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগী ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় রিট করা হলে হাইকোর্ট ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেন।