ভারতে ৩ দিনের রিমান্ডে পি কে হালদার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৫, ২০২২, ১২:২৬ এএম

ভারতে ৩ দিনের রিমান্ডে পি কে হালদার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া বেসরকারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক কেলেঙ্কারির মূল হোতা এবং দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রিতিষ্ঠান থেকে  হাজার কোটি টাকা পাচারকারী প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

ভারতের আনন্দবাজারসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয, শনিবার (১৪ মে) রাজ্যটির উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি আদালতে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এ আবেদন করা হলে শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে, পি কে হালদারকে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তারের কথা জানায় দেশটির গোয়েন্দারা। বলা হয়, বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। পি কে হালদার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মুদ্রা পাচার ও ১২৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় এতদিন তিনি পলাতক ছিলেন ।

গতকাল শুক্রবার কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার অন্তত ৯টি স্থানে অভিযান চালায় ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো অবৈধ টাকায় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে পি কে’র বিরুদ্ধে।পাচার করা অর্থে ভারতে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি।

শনিবার সন্ধান মেলে পি কে হালদারের প্রধান সহযোগী সুকুমার মৃধার পাচারকৃত অর্থেরও। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি) জানায়, মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সুকুমারের বিরুদ্ধে বিপুল আর্থিক দুর্নীতি পেয়েছেন তারা। সেখানে পিকে-মৃধা মিলে কিনেছেন বেশ কিছু বাগানবাড়ি।

স্বপন মিত্র নামে তাদের আরেক সহযোগীর বাড়িতেও হানা দেয় ইডি। সেখান থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়। তাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করে গোয়েন্দা বাহিনী।

এর আগে পিকে হালদারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন বাংলাদেশের উচ্চ আদালত। এ তালিকায় সুকুমার ও তার মেয়ে অনিন্দিতাও ছিলেন। পরে এ দু’জনসহ ৬২ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করে দুদক।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শিবশঙ্কর হালদার নামে ভুয়া পরিচয়ে পালিয়ে ছিলেন প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার। তিনি শিবশঙ্কর পরিচয়ে পশ্চিমবঙ্গে রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান ও আধার কার্ড জোগাড় করেছিলেন।

এর আগে, শুক্রবার (১৩ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি) জানায়, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে প্রশান্ত কুমার হালদার, প্রিতিশ কুমার হালদার, প্রানেশ কুমার হালদার ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত সম্পদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পি কে হালদার ভুয়া পরিচয়ে ভারতে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছিলেন। তিনি কলকাতা মহানগরীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সম্পত্তি কিনেছেন। তার নামে-বেনামে সম্পত্তির খোঁজে ১০টি জায়গায় তল্লাশি চলছে।

প্রসঙ্গত, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

Link copied!