বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ও পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান হল বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় বলে একে বৈশাখী পূর্ণিমাও বলা হয়। সেই পূর্ণিমা তিথির হিসেব - নিকেশ করে বুদ্ধ পুর্নিমা পালিত হচ্ছে ৪ মে।
এই দিনে বৌদ্ধরা পঞ্চশীল, অষ্টশীল, স্তোবপাঠ, স্তোবশ্রবণ ও সমবেত প্রার্থণা ও নানান আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়ে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা কেন উদযাপন করেন বুদ্ধ পুর্নিমা? কেন এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ দিন?
কেন এই দিনে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালিত হয়?
এই দিনে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালনের পেছনে একটি ,দুটি নয় মোট তিনটি কারণ রয়েছে। গৌতম বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল এই তিথিতে। শুধু গৌতম বুদ্ধের জন্মের জন্যই দিনটি বিশেষ নয়, একইদিনে তিনি বোধি বা সিদ্ধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমার দিন রাজা শুদ্ধধন ও রানি মায়াদেবীর সন্তান হিসেবে জন্ম হয় ভগবান বুদ্ধের।
বৌদ্ধ ধর্মে বলা হয়েছে, খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। মায়াদেবী কপিলাবস্তু থেকে পিতার রাজ্যে যাবারপথে বর্তমান নেপালের অন্তর্গত লুম্বিনি গ্রামে বুদ্ধের জন্ম দেন। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে গৌতম বুদ্ধ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। পাশাপাশি ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই একই দিনে তিনি মহানির্বাণ লাভ করেছিলেন।
তিন স্মৃতি বিজরিত এই দিনটি বৌদ্ধ ও হিন্দুদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হিন্দু ধর্ম অনুসারে শ্রী বিষ্ণুর নবম অবতার হিসেবে গণ্য করা হয় গৌতম বুদ্ধকে। ভারতে এই দিনটি যেমন বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বুদ্ধ জয়ন্তী নামে উদযাপন করা হয়, তেমনই শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, কম্বোডিয়া, জাভা, ইন্দোনেশিয়া, তিব্বত, মঙ্গোলিয়ায় এই দিনটি ভেসক নামে পালিত হয়। চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে নির্ধারিত হয় বলে প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন পালটে যায়।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ মানব সভ্যতার একজন ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন । মানব জীবনের, দুঃখ , কষ্ট , যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে তিনি কিছু জীবনের পথ-নির্দেশিকা দেন তাঁর অনুগামীদের। এই দিনে গৌতম বুদ্ধকে তার অনুসারীরা স্মরণ করেন একাগ্রচিত্তে।