সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১, ০৫:৫৫ পিএম
লেবাননের বৈরুতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১১০ জন সদস্য শান্তিরক্ষা মেডেলে ভূষিত হয়েছেন। ইউনাইটেড ন্যাশান্স ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবানন (ইউনিফিল) এর মেরিটাইম টাস্কফোর্স (এমটিএফ) কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আন্দ্রেস মুগে বাংলাদেশ নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’ এর কর্মকর্তা ও নাবিকদের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মকান্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ এই মেডেল তুলে দেন।
গত শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লেবাননের বৈরুতে মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেবানীজ নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চীফ ক্যাপ্টেন কমডোর হাইসাম ড্যাননোই ও লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদর দপ্তরের প্রতিনিধি কমডোর সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) আইএসপিআরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের সমুদ্রসীমা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফ্রিগেট, করভেট ও প্যাট্রোল ক্রাফটসমূহ এক দশকের বেশী সময় ধরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে আসছে।
মেডেল প্যারেড অনুষ্ঠানে আন্দ্রেস মুগে শান্তিরক্ষা মিশন লেবাননে নিয়োজিত সকল নৌবাহিনীর সকল সদস্যেকে সফলভাবে মিশন কর্মকান্ড সম্পাদনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এছাড়া, তিনি সকল নৌসদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ¡শান্তি কার্যক্রমে স্বার্থক এবং নিবেদিতভাবে অবদান রাখার জন্য সাধুবাদ জানিয়ে বর্তমানে বৈশ্বিক করোনা মহামারির প্রাদূর্ভাবের কারণে সকলকে বিশেষ স্বাস্থ্য সচেতনতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করেন।
জাতিসংঘের ম্যানডেট অনুযায়ী ইউনিফিলে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাফল্যের ধারাবাহিকতার জন্য তিনি নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১০ সাল হতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে। ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে নিয়োজিত ‘সংগ্রাম’ যুদ্ধজাহাজ লেবাননের ভূ-খন্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে।
পাশাপাশি উক্ত জাহাজ লেবানীজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন পরিচালনা, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের উপর নজরদারী, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানীজ নৌবাহিনী সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ করে যা”েছ। লেবাননে মোতায়েনের পর থেকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় গত ১১ বছর ধরে নৌসদস্যরা অত্যন্ত আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন করে চলেছে। নৌবাহিনীর এই গর্বিত অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম বৃদ্ধি করেছে।