৩৫ সংগঠন একসাথে : দাবি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ

সালমান শাওন, ঢাবি প্রতিনিধি

মে ৬, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

৩৫ সংগঠন একসাথে : দাবি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে ৩৫ টি সংগঠন একত্রিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে “গণহত্যাকারী” দল হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবিতে নতুন একটি রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। "জুলাই স্পিরিট" ধারণকারী ৩৫টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই জোটটির নাম "জুলাই ঐক্য"।

মধুর ক্যান্টিনে আত্মপ্রকাশ

মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে "জুলাই ঐক্য"-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ছাত্র, যুব ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

২০২৪ সালের "জুলাই গণঅভ্যুত্থান" এর প্রেক্ষাপট

সংবাদ সম্মেলনে "জুলাই ঐক্য"-এর অন্যতম সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ লিখিত বক্তব্যে বলেন,
“২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। গণতন্ত্রহীনতা, দমন-পীড়ন ও লুটপাটের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা, শিক্ষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করে।”

তিনি অভিযোগ করেন, এই অভ্যুত্থানে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন এবং প্রায় ৩১ হাজার আহত হন, যা আন্তর্জাতিক মহলে "গণহত্যা" হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। কিন্তু এতদিন পরও এর বিচার প্রক্রিয়া অনিশ্চিত রয়ে গেছে।

একমাত্র দাবি: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের ত্বরান্বয়

জোটের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “জুলাই বিপ্লবের বিপ্লবীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ২০২৪-এর গণহত্যা, শাপলা ট্রাজেডি, পিলখানা হত্যাকাণ্ডসহ সকল ঘটনার বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।”

জোট জানায়, এ লক্ষ্যেই জাতীয় পর্যায়ে ক্যাম্পেইন অব্যাহত রাখা হবে।

বক্তব্য দেন অংশগ্রহণকারী সংগঠনের নেতারা

ইনক্লাব মঞ্চের প্রতিনিধি ফাতিমা ঝুমা বলেন, “আওয়ামী লীগ তিনটি বড় গণহত্যা চালিয়েছে—পিলখানা, শাপলা এবং মোদিবিরোধী আন্দোলনে। এর প্রতিটি অপরাধের জন্যই দল হিসেবে তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের পরও কোনো বিচার হয়নি, এমনকি তথ্যও আমরা পাচ্ছি না। এই নীরবতা উদ্বেগজনক।” 

মূলধারার দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ

আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি প্লাবন তারিক অভিযোগ করেন, “মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। কিছু নেতা জেলে গিয়ে বেরিয়ে এসে আবার রাজনীতি করছে—এটা কিভাবে সম্ভব?”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। তাদের বিরুদ্ধে চলছে অপপ্রচার।”

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সংহতি

পুনাব (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) মুখপাত্র নাইমুল ইসলাম বলেন,
“আমরা বরাবরই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছিলাম এবং থাকবো। আওয়ামী লীগের বিচার এত বিলম্বিত কেন হচ্ছে? দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হোক—এটাই জনগণের চাওয়া।”

 

Link copied!