দেশের রাজনীতিতে আবারও আলোচনায় এসেছে ২৮ অক্টোবর। সরকারের পদত্যাগের দাবির পাশাপাশি বিএনপির চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে মহাসমাবেশ করবে দলটি। মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে কঠোর দিক নির্দেশনা থাকলেও সকলের মনে প্রশ্ন পরবর্তী কর্মসূচি কী হতে যাচ্ছে। দলটির একাধিক নেতা দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, এই মহাসমাবেশ থেকে ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সেই সাথে একদিন নয় বরং তিন দিনব্যাপী কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে।
সমন্বয় করবে বিভাগীয় কমিটি
বিএনপি সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ২৮শে অক্টোবর ঢাকায় তাদের মহাসমাবেশের প্রস্তুতির কাজ জোরদার করেছে এবং দলটির প্রতিটি জেলা ইউনিটও এখন কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের করণীয় কিংবা কৌশল নির্ধারণ করছে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে প্রতিটি বিভাগের জন্য একটি করে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা থেকে কর্মী সমর্থকদের ঢাকায় আসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবে। এ ক্ষেত্রে কোন ‘অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে’ পরিস্থিতি অনুযায়ী সেটি মোকাবেলা করার কৌশল চূড়ান্ত করার জন্যও কাজ করবেন তারা। বিএনপির নেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঘেরাও কর্মসূচি হতে পারে তিন দিনব্যাপী
বিএনপি নেতারা আরও জানায়, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ঘেরাও কর্মসূচি আসতে পারে। আঠাশে অক্টোবরের মহাসমাবেশ থেকে সচিবালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, নির্বাচন কমিশন ঘেরাওসহ এ ধরনের আরও কিছু কর্মসূচি বিএনপি ঘোষণা করতে পারে। তবে এই ঘেরাও কর্মসূচি একদিন নয় বরং তিনদিনব্যাপী হতে পারে।
সেই সাথে ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থানের কর্মসূচির ঘোষণাও আসতে পারে। যদিও গত ২৮ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ করেছিল বিএনপি। সেই সমাবেশ থেকে অনেকটা হুট করেই পরদিন ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি। কিন্তু সেই অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকার নয়াবাজার ও ধোলাইখাল সহ ২/১টি জায়গায় সংঘর্ষ হলেও কিছু পয়েন্টে নেতাকর্মীদের উপস্থিত না হওয়ার কারণে কর্মসূচিটি ব্যর্থ হয়েছিল। প্রায় দুই বছরের ধারাবাহিক কর্মসূচির পর জুলাইতে ওই কর্মসূচি সফল না হওয়ায় ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল দলের শীর্ষ পর্যায়ে। এর জের ধরে ছাত্রদলের সভাপতিকে অব্যাহতি দেয়াসহ পরবর্তীতে কিছু ইউনিটে নেতৃত্বের পরিবর্তনও আনা হয়েছিল।
এখন দলের নেতারা বলছেন সেবার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের কর্মসূচিটি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা সেটি করতে পারেননি। এ কারণেই এবার প্রতিটি বিভাগের দায়িত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের রাখা হয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো সব প্রস্তুতি নিবে মহাসমাবেশ সফল করার বিষয়ে।
বিএনপির সিনিয়য় যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই মুহুর্তে আমরা মহাসমাবেশ নিয়ে পরিকল্পনা করছি। সেখান থেকেই সব কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সকল বিষয়ে সমন্বয় করে এই ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক নেতারা বলছেন প্রস্তুতি সভাগুলোতে মহাসমাবেশ ঘিরে যাবতীয় কৌশল ও করণীয় সম্পর্কে বলা হচ্ছে এবং তারা আশা করছেন দলের নির্দেশনা অনুসরণ করেই মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যথাসময়ে ঢাকায় আসতে ও দলের নির্দেশ মতো আন্দোলন সফল করে তুলতে সক্ষম হবে। আর এ কর্মসূচির মূল্য লক্ষ্য হবে নভেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার যে পরিকল্পনা নির্বাচন কমিশন করছে সেটি একতরফাভাবে করতে না দেয়া।
বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, ১৮ই অক্টোবর মহাসচিব তাঁর বক্তৃতায় নির্দেশনা দিয়েছেন এবং সেটি হলো দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আর থামা যাবে না। তবে অনেক নেতাকর্মীরা জানে না কেন কঠোর আন্দলনে নামছে না দলটি।