এপ্রিল ২০, ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
সাংবাদিকদের জন্য সরকারিভাবে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সহযোগিতার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকতার জন্য একটি চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই আমরা বাংলাদেশে। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার মুক্ত গণমাধ্যম, সাংবাদিকতার একটি চমৎকার পরিবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। এর জন্য যা যা উপকরণ লাগে সে বিষয়গুলো আমরা নিশ্চিত করতে চাই এবং তার মধ্য দিয়ে আমরা বিশ্বাস করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি যারা তারাই উপকৃত হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য সাংবাদিকতা থাকবে, গণমাধ্যম থাকবে, মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে, মুক্ত সাংবাদিকতা থাকবে। সরকার ও কর্তৃপক্ষের ভুল-ভ্রান্তি থাকলে, ব্যর্থতা থাকলে তার সমালোচনাও হবে।’
অনুষ্ঠানে চরমপন্থীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান, তারাই মিথ্যা অপপ্রচার ও অপতথ্যের ওপর ভর করে তাদের অপরাজনীতি করে।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু আইন করলেই হবে না, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক রূপান্তর করতে হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য অধিকার আইনকে আরও সুদৃঢ় করার ও তথ্য কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকরের বিষয়টি আমরা ভাবছি।’
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘জনগণের যেসব তথ্য জানার অধিকার আছে, সেসব তথ্য দেওয়ার বিষয় আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। এই চিন্তা জাগ্রতের চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার তথ্য দিতে চায়, কারণ যদি তথ্য না থাকে তখনই অপপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়।’
‘অসত্য তথ্য সরকার-সাংবাদিকরা একসঙ্গে প্রতিরোধ করবে’
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও যোগ করেন, ‘অসত্য তথ্যের মাধ্যমে যে অপপ্রচার করা হয়, সেগুলো সরকার ও সাংবাদিকরা একসঙ্গে মিলে প্রতিরোধ করতে হবে।’
এর কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং গঠনমূলক সমালোচনা যেমন গণতন্ত্রের জন্য, একটি দেশ-সমাজ এগিয়ে যেতে অপরিহার্য, একইভাবে তথ্যের বিপরীতে অপতথ্য সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। যে কারণে সম্মিলিতভাবে আমাদের একটি দায় আছে, কীভাবে আমরা অপতথ্য রোধ করতে পারি ও কীভাবে তথ্যের অবাধ প্রবাহ আমরা সুনিশ্চিত করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপতথ্যকে আমাদের রোধ করতে হবে, কিন্ত অপতথ্য রোধ করতে গিয়ে আমরা তথ্যের অবাধ প্রবাহ বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত করতে চাই না।’
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘সাংবাদিকতার মধ্যে যারা পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে অপসাংবাদিকতা করেন তারা আসল সাংবাদিকতাকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকেই কিন্তু আসে।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রের শত্রু যারা, স্বাধীনতার শত্রু যারা, সমাজের অপশক্তি যারা, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের চালিয়ে রাখতে হবে। এ লড়াইয়ে সাংবাদিকরা সরকারকে সহযোগিতা করবেন।’
অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম কর্মী আইন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইনটি পর্যালোচনার জন্য সবগুলো সাংবাদিক সংগঠন থেকে দুজন প্রতিনিধি নিয়ে সেল তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই সেলের সদস্যদের আলাপ-আলোচনার পর তাদের বক্তব্য নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হবে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।