জুলাই ১২, ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
মিরনজিল্লায় হরিজন সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় মুখ খুলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আউয়াল হোসেন। গত বুধবারের ঘটনায় তাকে জড়িয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। হাজী আউয়াল বলেন, “সেদিন (বুধবার) আমি সিটি করপোরেশন ও ম্যাজিট্রেট নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলাম। হরিজন সম্প্রদায় আমার ভোটার। আমি কেন তাদের উচ্ছেদ করতে যাবো?”
শুক্রবার (১২ জুলাই) নিজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে কাউন্সিলর আউয়াল বলেন, “গত ৯ জুন নগর ভবনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ফজলে নূর তাপস হরিজনদের বসতি বংশালের মিরনজিল্লা পল্লীতে নির্মিত বরাদ্দকৃত ফ্লাট তাদের বুঝিয়ে দেন। এর একমাস পার হলেও তারা বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাটে না ওঠায় ৯ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান আমাকে একটি চিঠি দেন।”
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বুধবার ম্যাজিট্রেট মনিরুজ্জামানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত বুধবার হরিজনদের নিজ ফ্লাটে ওঠার জন্য তাগিদ দিতে জল্লায় যাবেন। সেখানে আপনি স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে আপনি উপস্থিত হবেন। সেই অনুযায়ী ম্যাজিট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা মতিউর রহমান স্কুলে পুলিশ উপস্থিত হলে আমি সেখানে উপস্থিত হই। সেখানে ম্যাজিট্রেটের নির্দেশে অঞ্চল-৪’র বর্জ্য সহকারী আজগর বরাদ্দপ্রাপ্ত হরিজনদের হাজির করেন ও তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন আজকের মধ্যে যদি আপনারা বরাদ্দপ্রাপ্ত নিজ ফ্লাটে না ওঠেন, তবে আপনাদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে। এখানে বরাদ্দপ্রাপ্ত জনের মধ্যে ৫১ জন উপস্থিত হন। তখন ফ্লাট বরাদ্দপ্রাপ্ত হরিজনরা জানান, এখানে আসার সময় হরিজন নেতারা বাধা দিয়েছে।
ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আজগর, ওয়ার্ডের সিআই ও ফ্ল্যাট নির্মাণের ঠিকাদার বরাদ্দপ্রাপ্ত মিরনজিল্লা পল্লীতে হরিজনদের ফ্লাটে নিয়ে গেলে সেখান থেকে আজগর মুঠোফোনে ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানকে জানান, হরিজন সম্প্রদায়ের নেতারা বরাদ্দপ্রাপ্ত হরিজনদের ফ্লাটে ঢুকতে দিচ্ছে না। তখন ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে তার সঙ্গে স্পটে যাওয়ার কথা বললে আমিও তাদের সঙ্গে যাই। সেখানে গেলে হরিজন নেতারা ম্যাজিস্ট্রেটসহ আমাদের সেখান থেকে চলে আসতে বলেন।
এদিকে ফ্ল্যাট প্রাঙ্গণে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি দেখে বরাদ্দপ্রাপ্ত হরিজনরা নিজ ফ্ল্যাটে যেতে সাহস পান। এ-অবস্থায় হরিজনদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। তখন আমরা স্থান ত্যাগের সময় আমাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় হরিজনদের নিক্ষেপ করা ইট-পাটকেলে স্থানীয় কয়েকজন আহত হলে একপর্যায়ে এই সংঘর্ষে এলাকাবাসী জড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
হরিজনদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেবো- পাল্টা প্রশ্ন তুলে আউয়াল হোসেন বলেন, “তাদের উচ্ছেদ করে আমার কোনও লাভ নেই। বরং তাদের পুর্নবাসন করে দিতে পারলে আমার সার্থকতা। কোনও জনপ্রতিনিধি চায় না তার ভোটব্যাংক নষ্ট হোক। হরিজনরা আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটার। আমি কেন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবো? কিন্তু এখানে একটি মহল রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাকে জড়িয়ে হরিজনদের নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।”