জুন ২৮, ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
পাশাপাশি, নির্বাচনকালে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
সভায় তিনি বলেন, “আমাদের আসল কাজ হলো একটি ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা। এখন যেগুলো করছেন, সেগুলো সময় ও সুযোগের কারণে করা সম্ভব হচ্ছে। তবে মূল প্রস্তুতি শুরু করতে হবে নির্বাচন ঘিরেই।”
১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এখন অত্যন্ত জরুরি। অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ক্যাডার আছেন, যারা স্বাভাবিকভাবে অস্ত্র জমা দেবেন না। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এ ধরনের অস্ত্র উদ্ধার করতেই হবে। বৈধ অস্ত্রগুলোও নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য জমা রাখতে হবে।”
পরিকল্পনা উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা এখানে কয়েকদিনের জন্য এসেছি। এরপর চলে যাব। তবে কিছু ইতিবাচক ধারা শুরু হয়েছে। সুশাসন এক দিনে হয় না, তবে আমরা আগের জায়গায় ফিরে যাব না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।”
সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এটিকে "শ্বেতহস্তী প্রকল্প" বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “টানেল বানিয়ে এখন বলছেন, গাড়ি চলে না। এটা আগে ভাবা উচিত ছিল। এখন প্রতিদিন টানেল চালু রাখতে লোকসান গুনতে হচ্ছে।”
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহেদ হোসেন সভায় জানান, টানেলের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচলের হার কম। তিনি বিকল্প একটি সংযোগ সড়ক প্রশস্ত করার প্রস্তাব দেন। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “টানেল এখন শোপিস হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ কয়দিন এটা দেখতে আসবে? এটা তো দেখার জিনিস না।”
আনোয়ারা প্রান্তে নির্মিত পাঁচ ও সাত তারকা মানের রিসোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “এত টাকা খরচ করে রিসোর্ট করা হলেও মানুষজন তো আসবে না এমন জনশূন্য জায়গায়। রক্ষণাবেক্ষণের খরচই উঠছে না। এগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, যদিও কেউ নিতে চাইছে না।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) শারমিন জাহান। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।