জুন ২৮, ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম
‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ ব্যানারে শুরু হওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ শনিবার (২৮ জুন) ফেনীতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার চার দফা দাবিতে এই কর্মসূচি চলছে, যার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বিদেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিহত এবং রাখাইনের জন্য প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর প্রত্যাখ্যান।
শনিবার সকালেই ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন বিগত সরকারের ধারাবাহিকতায় বন্দরের ইজারা বা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসে—এটাই আন্দোলনের দাবি।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি সরকার এসব পদক্ষেপ থেকে সরে না আসে, তাহলে চট্টগ্রামের সমাপনী সমাবেশ থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
ফেনীর সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, এবং সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দনসহ বিভিন্ন বামপন্থী নেতৃবৃন্দ। সভাপতিত্ব করেন সিপিবি ফেনী জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট বিমল শীল এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ফেনী বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, রোডমার্চটি শুক্রবার সকালে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করে। এর মূল দাবি—চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানির সম্পৃক্ততা বন্ধ, রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ গঠনের উদ্যোগ প্রত্যাহার, এবং স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সাম্রাজ্যবাদী সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা প্রতিহত করা।
৫০টিরও বেশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় শতাধিক নেতাকর্মী এই রোডমার্চে অংশ নিচ্ছেন।
শুক্রবার রাতে ফেনী পৌঁছানোর আগে তারা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও কুমিল্লায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অংশ নেন।
শনিবার সকালে ফেনীর হাজারি রোড মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
রোডমার্চে অংশগ্রহণকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড বহন করেন, যাতে লেখা ছিল—‘মা, মাটি, মোহনা—বিদেশিদের দেব না’, ‘অসম ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিল কর।’
রোডমার্চটি মিরসরাই ও এ কে খান এলাকায় সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সামনে সমাপনী সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।