এনবিআরের অচলাবস্থায় আমদানি-রপ্তানি হুমকিতে, উদ্বেগে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

জুন ২৮, ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম

এনবিআরের অচলাবস্থায় আমদানি-রপ্তানি হুমকিতে, উদ্বেগে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থা দেশের অর্থনীতিকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারা।

তাঁরা বলছেন, এনবিআরের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে, যা দেশের রপ্তানিখাতকে চরম অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিচ্ছে।

শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ, বিটিএমইএ, বিকেএমইএ, বিসিআইসহ ১৩টি শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতারা এসব উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ)।

 তিনি জানান, এনবিআরের কার্যক্রম প্রতিদিন মাত্র সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সীমিত থাকায় কাঁচামাল খালাস, ইউপি (ইউনিট প্রাইস) অনুমোদন ও অন্যান্য কাস্টমস কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে। ফলে আমদানি-নির্ভর শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং রপ্তানির শিডিউল সময়মতো রক্ষা করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, পণ্য বন্দরে পড়ে থাকায় রোদে-বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ফলে খরচ বাড়ছে। এক দিনের কাজের জন্য ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে, যা লিড টাইম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বেশ কয়েকজন ক্রেতা ইতিমধ্যে রপ্তানি আদেশ বাতিলের হুমকি দিয়েছেন বা এয়ার শিপমেন্টের দাবি তুলেছেন, যা খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ। এছাড়া পোর্ট ড্যামারেজ চার্জও গুণতে হচ্ছে চারগুণ হারে।

তবে ব্যবসায়ীরা পরিষ্কারভাবে জানান, তাঁরা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি সমর্থন করেন না। বরং তাঁরা একটি দক্ষ, স্বচ্ছ ও হয়রানিমুক্ত এনবিআর গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন।

তাঁরা বলেন, সংকট নিরসনে সময়ক্ষেপণ না করে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিডাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসা উচিত।

একই সঙ্গে তাঁরা এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে স্বপদে ফিরে আসার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, এলএফএমইএবির সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিসিএমইএর সভাপতি মঈনুল ইসলাম, বিএফএলএলএফইএর চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ এবং এমসিসিআইর সহ-সভাপতি সিমিন রহমান প্রমুখ।

Link copied!