মৎস্য খামারের আড়ালে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করেছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য পারভীন আক্তারকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। গতকাল সোমবার কক্সবাজার সদরের পূর্ব হামজার ডেল গ্রামের এই বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য বেরিয়ে আসে বলে জানিয়েছেন এটিইউয়ের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। গ্রেপ্তার হওয়া পারভীন আক্তারের কাছ থেকে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, “গ্রেপ্তার পারভীন আক্তারসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা মৎস্য চাষের আড়ালে নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের সদস্যপদ নেওয়ার কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। ভাড়া করা খামার বাড়িটিকে আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন তারা। নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ গোপনীয়তার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনা চালিয়ে আসছিল চক্রটি।”
তিনি আরও বলেন, “এই লক্ষ্যে খামার বাড়িটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম স্থাপন এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ ইত্যাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে জমা রাখেন। গ্রেপ্তার পারভীন আক্তার তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত সমর্থকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াও ওই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতে আসা সদস্যদের বসবাসের সুযোগ তৈরি করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় রান্না করাসহ প্রশিক্ষণের জন্য আসা নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিকভাবে সমন্বয় করতেন।”
প্রায় ৩ বছর আগে এজাহারভুক্ত আসামি মো. হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ওরফে আনোয়ার আহমেদ ওরফে শাহজালাল ওরফে আরিফ (৩২) আড়াই একর জায়গায় অবস্থিত একটি খামার বাড়ি ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেন। হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম এবং তার স্ত্রী এজাহারভুক্ত আসামি উম্মে হাফসা (২৫), গ্রেপ্তার পারভীন আক্তার ও তার স্বামী রশিদ আহম্মদ (সাংগঠনিক নাম তানভীর) মৎস্য খামারের দোতলা পাকা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে বসবাস করতেন। হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ৫ জুন অস্ত্রগুলিসহ নরসিংদীর রায়পুরা থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর গ্রেপ্তার পারভীন আক্তার আত্মগোপন চলে যান বলে জানায় এটিইউ।