আগস্ট ৭, ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, তাদের জন্মই হয়েছিল সংবিধান লংঙ্ঘিত করে তাই তারা আজকে অনায়াসে বলতে পারে সংবিধানের প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন দল আন্দোলন করবে বিভিন্ন কথা বলবে, কিন্তু সংবিধান যেটা বলবে সেভাবেই রাষ্ট্র সেভাবেই পরিচালনা হবে। কারও কথায় রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে না।
সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ কর্তৃক ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, যারা বলে সংবিধানকে কেটে ফেলা যায়, পরিবর্তন করা যায়, তারা আইনের ছাত্র না। যদি তাই হয়ে থাকে তবে আমি বলবো তারা জ্ঞানপাপী। সংবিধান হলো সর্বোচ্চ আইন, সাধারণ আইনের সাথে সংবিধানের মূল পার্থক্য হলো সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার আইন। রাজতন্ত্রের বিকল্পে যখন গণতন্ত্র এসেছে, আর গণতন্ত্র পরিচালনার জন্য তৈরি করা হয়েছে সংবিধান।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা যারা, তারা সংবিধান মানে নাই। বন্দুকের নলায় দেশের ক্ষমতা নিয়েছে তাদের থেকে বাঙালি জাতি আর কিছু আশা করতে পারি না। নির্বাচন হবে সংবিধান আওতায়। ২০০৮ সালের মতো আবার শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।
শেখ কামালের স্মরণে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল ওসমানীর প্রথম এডিসি ছিলেন শহীদ শেখ কামাল। দুই নম্বর এডিসি ছিল খুনি নূর। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা আমাদের বাসা আক্রমণ করে বাবাকে-মাকে হত্যা করে। তারপর ঘাতকেরা ৩২ নম্বরে অবস্থানকারী খুনি চক্রকে জানায়। এরপর খুনি চক্র ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসার ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করে। গুলি করতে করতে যখন ওরা বঙ্গবন্ধুর বাসার ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করলো তখন গুলির আওয়াজে শেখ কামাল ঘুম থেকে উঠে গেলেন। তিনি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সকলকে ডাকার চেষ্টা করলেন। কাউকে পাওয়া গেল না। তিনি অস্ত্র নিয়ে নিচে নামলেন এবং খুনিদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেন। তখন তিনি দেখলেন যে তার ব্যাচমেট (খুনি নূর সেখানে দাঁড়িয়ে আছে)। সেনাবাহিনীতে ব্যাচমেটরা একে অপরের অনেক কাছের বন্ধু হয়ে যায়। একে অপরকে অনেক বিশ্বাস করে, আস্থা রাখে। কিন্তু সেখানে এত বড় বেঈমান, এত বড় মোনাফেক-- খুনী নূরকে দেখে তিনি হতভম্ব হয়ে গেলেন।’
তাপস আরও বলেন, ‘আজকে জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এটাই হোক শিক্ষা। বেইমান মোনাফেক আমাদের পাশে থাকে, সাথে থাকে। তাই, আমাদের বেঈমান, মোনাফেককে চিহ্নিত করতে হবে এবং আজকের দিনেও তাদের কোনো ছাড় দেয়া যাবে না।’
শেখ কামাল তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিপূর্ণভাবে অনুকরণ, অনুসরণ ও রপ্ত করেছিলেন জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘বুঝে-অবুঝে সকল সন্তানের কাছে তার পিতা একজন আইডল হন, একজন আইকন হন। সন্তান তার বাবাকে জ্ঞাতসারে-অজ্ঞাতসারে অনুকরণ করেন, অনুসরণ করেন এবং বাবার শিক্ষা-দীক্ষা নিজের মধ্যে রপ্ত করেন। শেখ কামাল পূর্ণরূপেই তার পিতাকে অনুকরণ করেছিলেন, রপ্ত করেছিলেন।’
ঢাদসিক মেয়র আর বলেন, সবাই তো রাজনীতি করে না, আজকের সোনার বাংলার তৎকালীন সময়ের রূপকার শেখ কামাল। যা আজকের স্মার্ট বাংলাদেশ। তরুণ সমাজকে আলোকিত করতে খেলাধুলা-সংস্কৃতিমনা করতে শেখ কামালের ভূমিকা অপরিসীম।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আনিছুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।