‘অভিশ্রুতির বাঁচার প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল। ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসত। ইচ্ছা ছিল পৃথিবীর অনেক জায়গা ঘুরে দেখবে। কিন্তু এসব আর কিছুই হলো না। মুহূর্তে চলে গেল।’ এমনটাই জানালেন অভিশ্রুতির সাবেক সহকর্মী জিন্নাত আরা জশোয়া।
বেইলি রোডের আগুনে অকালেই প্রাণ হারালেন দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সদ্য সাবেক সংবাদকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। অভিশ্রুতি চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে তিনি মারা যান। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সহকর্মীরা তার মরদেহ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় সহকর্মীরা গভীরভাবে শোক প্রকাশ করেছেন। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার ফিঙ্গার প্রিন্ট সংরক্ষণ করা হয়।
অভিশ্রুতির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। সদ্য ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। ঢাকার মৌচাকের সিআইডি অফিসের বিপরীতে একটি মেসে থাকতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন দীর্ঘদিন। কর্মক্ষেত্রে উদ্যম ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। সবার সাথে সহজেই মিশে যেতে পারতেন। স্বপ্ন দেখতেন অনেক বড় হবেন। তবে এভাবে জীবনপ্রদীপ নিভে যাবে তা ভাবা যায় না।
অভিশ্রুতির বান্ধবী জশোয়া জানান, অভিশ্রুতি লিখতে ভালোবাসতেন। এর পাশাপাশি ঘুরে বেড়ানো ছিল তার শখ। বেইলি রোডে গিয়েছিলেন হয়ত সুন্দর এক সময় কাটাতে। তবে কে জানত সময়টা এতটাই ভয়ংকর হবে! শেষ জানিয়েছিলেন সুস্থ হলে আবার ফিরবেন কাজে, তবে তা আর হয়ে উঠল না।
মাসখানেক আগে অসুস্থতার কারণে চাকরি ছেড়েছিলেন অভিশ্রুতি। গতকাল আগুনের ঘটনার পর দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের চিফ রির্পোটার খোঁজ পান সাবেক আরেক সহকর্মী তুষার হাওলাদারের সঙ্গে যিনি ছিলেন তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন জানা যায়, অভিশ্রুতি ছিলেন তুষারের সাথে। সহকর্মীরা অভিশ্রুতির মরদেহ শনাক্ত করেন । পরে তার পরিবারকে জানানো হয়। এ ঘটনায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।
দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের চিফ রিপোর্টার গোলাম রাব্বানী জানান, অভিশ্রুতি রাজনৈতিক বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। ভবিষৎতে রাজনীতি নিয়ে কাজ করতে চাইতেন তিনি।