অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০২:১০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহালদশা ও যানজট পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাওয়ার পথে নিজেই তীব্র যানজটের কবলে পড়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার, ০৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড মোড়ে যাওয়ার কথা তার।
এর আগে সকালে চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সেখান থেকে সড়কপথে আশুগঞ্জ রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। ১০টা ২০ মিনিটে তিনি আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোডের উদ্দেশে রওনা হন। পথে আশুগঞ্জের সোনারামপুর এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা যানজটে আটকে ছিলেন। এরপর গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন। এরপর বাহাদুরপুর এলাকায় তিনি একটি মোটরসাইকেলে করে বিশ্বরোডের দিকে রওনা হন। সঙ্গে আরেকটি মোটরসাইকেলে ছিলেন উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনউদ্দীন। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি মহাসড়ক ঘুরে দেখবেন সমস্যা কোথায়, সমাধান করবেন। খবর প্রথম আলো।
উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম ও পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক এবং সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন। এ সময় সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসেন ও হাইওয়ে পুলিশ সুপার শাহীনুর আলম উপদেষ্টার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
সওজের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা কার্যালয়সহ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে দীর্ঘ যানজট নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে কার্যকর উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর গত শনিবার বিকেল থেকেই সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় সড়ক মেরামতকাজ শুরু করে সওজ। সেখানে তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলছে। গোলচত্বর অংশে ১২ মিটার প্রস্থ ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য, আর গোলচত্বর থেকে সিলেটমুখী সরাইল কুট্টাপাড়া খেলার মাঠ পর্যন্ত ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে তিন স্তরে ইট ও বালু বিছানো হচ্ছে। ঢাকা, কুমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তৈরি ইট আনা হচ্ছে। এখানে মোট চার লাখ ইট বিছানো হবে। শনিবার বিকেল থেকে রোববার রাত দুইটা পর্যন্ত, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এবং গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত গোলচত্বর এলাকায় তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলে।
সরেজমিন পরিদর্শন ও সওজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাইল বিশ্বরোড অংশে যানজট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার সময়সীমা গতকাল বিকেলে শেষ হয়েছে। গতকালের মধ্যে বিশ্বরোড অংশে সড়কের মেরামতকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল বিকেলে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সড়ক মেরামতকাজের দৃশ্যমান হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে শনিবার বিকেলে কাজ শুরুর পরপরই ঢাকা-সিলেট সড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে যানজট সৃষ্টি হয়। সমন্বয়হীনতা ও মন্থরগতির কারণে মহাসড়কে যানজট ও দুর্ভোগ—দুটোই বেড়েছে। শনিবার বিকেলে শুরু হওয়া যানজট এখনো লেগেই আছে। মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে হবিগঞ্জের মাধবপুর পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার এলাকায় চার দিন ধরে দিন-রাত দীর্ঘ যানজট লেগে আছে। আজ সকাল থেকেই সড়কে দীর্ঘ যানজট আছে।
সরাইল ইউএনও মোশারফ হোসেন বলেন, সকাল থেকে মহাসড়কে তীব্র যানজট। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যানজট নিরসনে কাজ করছেন।