‘বাংলা ব্লকেড’

ঢাকার সঙ্গে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১০, ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম

ঢাকার সঙ্গে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ

দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর কাওরানবাজার ও মহাখালী আমতলী রেললাইন অবরোধ করে রেখেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরের দিকে ঢাকা রেলওয়ে থানা কমলাপুর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহমেদ বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওসি ফেরদাউস আহমেদ বলেন, “দুপুর ১২টার পর কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রেললাইনে কাঠ ফেলে অবরোধ করে রেখেছে। শিক্ষার্থীরা মহাখালী আমতলা লেভেল ক্রসিং, বনানী চেয়ারম্যান বাড়ির পাশাপাশি ও কারওয়ান বাজার রেললাইনে অবস্থান নিয়েছেন। দুই পাশেই রেল চলাচল বন্ধ আছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত এখানে চলে এসেছি। যাতে করে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।”

রেললাইন অবরুদ্ধ থাকায় ঢাকার সঙ্গে সাড়া দেশের রেল যোগাযোগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ আছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত রেল চলাচল স্বাভাবিক করতে।”

এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন বলেন, “১১টা ১৫ এর পর থেকে অবরোধের কারনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা রয়েছে। সবশেষ ঢাকা থেকে চলন্তিকা এক্সপ্রেস যেতে পেরেছে, অগ্গিবিনা এক্সপ্রেস আটকা পড়েছে। আর ঢাকায় ঢোকার পথে বনলতা, সিল্ক সিটিসহ কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে, ঢাকায় সবশেষ উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রবেশ করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।”

এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, “আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রেললাইন অবরুদ্ধ করা হয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

এর আগে, সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। তবে এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। সেই সঙ্গে স্থায়ী সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে এমন ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান।

নাজমুল হাসান বলেন, “আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। কোটা নিয়ে বারবার টালবাহানা দেখতে চাই না। সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

এর আগে, বুধবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এসময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে।  

Link copied!