নিজের প্রকৃত আয়ের মাধ্যম ছাড়া বিপুল সম্পদের মালিকানার সঠিক বিবরণ না দিতে পারায় রাজধানীর উত্তরা কর অঞ্চল-৯ এর কর্মকর্তা আবু হাসান মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী লাকী রেজওয়ানার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৩০ এপ্রিল রবিবার দুদকের গাজীপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা দুটো করেন উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাগুলো হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় একমাত্র আসামি খাইরুল ইসলাম। অপর মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে তাঁর স্ত্রী লাকী রেজওয়ানাকে ও দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে তাঁকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঢাকার উত্তরায় কর অঞ্চল-৯ এর কর পরিদর্শক আবু হাসান মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর কমিশনে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। যেখানে তিনি মাত্র ২৮ লাখ ২৮ হাজার ২৭৭ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব জমা দেন। কিন্তু খাইরুল ইসলামের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় তার নামে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১৫ শতাংশ জমির ওপর ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান পায় দুদক। যার দালিলিক মূল্য পাওয়া যায় ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৫ টাকা, যা তিনি গোপন করার চেষ্টা করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঢাকার উত্তরার কর অঞ্চল-৯ এর কর্মকর্তা আবু হাসান মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম তাঁর সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ৩২ লাখ ১ হাজার ৮৯৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে দুদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া স্ত্রী মিসেস লাকী রেজওয়ানার নামে সাব কবলা দলিল মূলে ক্রয় পরবর্তী নিজ নামে হেবা বিল এওয়াজ দলিলের মাধ্যমে অর্জিত ১৫ শতাংশ জমিসহ দোতলা (ডুপ্লেক্স) বাড়ি নির্মাণ ও দলিল (নং-৪১৯৫/১৯ এর খরচসহ সর্বমোট ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৫ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। পরে সেটা নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত উক্ত অবৈধ সম্পদের উৎস আড়াল করার অসৎ উদ্দেশ্যে তার অবৈধ আয়ের প্রকৃত উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করার চেষ্টা করেন। সে জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে তার পিতা চাঁদ মিয়ার নামে আয়কর বিভাগে ভুয়াভাবে দেখিয়ে অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অপচেষ্টা করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) এর ধারায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) এর ধারায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।