নভেম্বর ১২, ২০২২, ০৩:৩৭ পিএম
আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আজ শনিবার। শহরের কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে দুপুর বিএনপির পূর্বঘোষিত গণসমাবেশ হওয়ার আগেই গতকাল শুক্রবার সমাবেশস্থল লোকে লোকারণ্য। মনে হচ্ছে যেন একটু পরেই শুরু হবে গণসমাবেশ।
গণসমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ স্থানীয় বিএনপি নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
আগের পাঁচটি বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো ফরিদপুরের সমাবেশ ঘিরেও মহানগর এবং আশপাশের জেলায় উত্তাপ ছড়িয়েছে। জলে-স্থলে সব রকম পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আগে ভাগেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। পথে পথে বাধা, পুলিশের চেক পোস্ট, তল্লাশি ডিঙিয়ে গণসমাবেশে যোগ দিতে তিনদিন আগে থেকে বৃহত্তর ফরিদপুরের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে রংপুরে আসেন তারা। কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে করে সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন।
আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে বড় জমায়েতের চ্যালেঞ্জ বিএনপির। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় কার্যত বিচ্ছিন্ন ফরিদপুর। তবুও সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশালেও ধর্মঘট ডাকার কারণে বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিতে নেতাকর্মীদের অনেক বাধা-বিপত্তি পার হতে হয়।বাস ধর্মঘট ডাকায় দুদিন আগ থেকেই নেতাকর্মীরা শহরে চলে আসেন। নৌকার ঘাঁটিতে ব্যাপক শোডাউনের মধ্য দিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চায় দলটি।
আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বৃহত্তর ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ,মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। তারপরও বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব জেলায় বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি অনেক মজবুত হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশের সমন্বয়ক শামা ওবায়েদ।
ফরিদপুরের গণসমাবেশ সম্পর্কে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। একসময় এই এলাকাকে আওয়ামী লীগের দুর্গ বলা হতো। এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। এখন এ অঞ্চল বিএনপির দুর্গে পরিণত হয়েছে। সমাবেশ ঘিরে তারই প্রমাণ পাওয়া যাবে।’
সমাবেশের সহসমন্বয়ক এবং কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল ও যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু জানান, শহরে আবাসিক হোটেল খুব কম এবং মানসম্মতও নয়। এত নেতাকর্মীর থাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই। তাই সমাবেশ মাঠ ও আশপাশের এলাকায় শামিয়ানা টাঙিয়ে থাকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশে রেকর্ডসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নিয়েছে। এরইমধ্যে সমাবেশস্থল নেতাকর্মীদের আগমনে পূর্ন হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, নেতাকর্মীদের হত্যা, হামলা ও মামলার প্রতিবাদে এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাদেশের দশ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ হচ্ছে ফরিদপুরে বিভাগীয় সমাবেশ।