দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নীচে হাজারো রোহিঙ্গা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৫, ২০২৩, ০৯:১০ পিএম

দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নীচে হাজারো রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রবিবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের বি-ব্লকে আগুন লাগার পর ফায়ারসার্ভিসের ১০টি ইউনিট, পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোনো ঘটনা না ঘটলেও দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে ছা্ট হয়ে গেছে। বসতঘরসহ ক্যাম্পের দোকানপাট পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদও পুড়ে গেছে আগুনে।সব কিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন হাজারো রোহিঙ্গা।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে নিশ্চিত করেছেন ৮ আর্মড পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বিকেল পৌনে ৩টার দিকে লাগা আগুন প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রথমে ১১ নম্বর আশ্রয় শিবিরের বি-ব্লকে আগুন লাগালেও আগুনের তীব্রতায় তা প্রায় পাশাপাশি লেগে থাকা ৯, ১০ ও ১২ নম্বর ক্যাম্পও ছড়িয়ে পড়ে।”

তিনি আরও বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে এক রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।”

এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ২ হাজার ঘর, ২২ হাজার মানুষ, ৩৫ টি মসজিদ, বিভিন্ন এনজিও, স্কুল, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রসহ ৫২ টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দউল্লাহর দাবি, ১১, ৯, ১০ নম্বর ক্যাম্পের আটটি ব্লকের কমপক্ষে আড়াই হাজার ঘর পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘এই ক্যাম্পগুলোর কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষকে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে।’

উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জ (সিনিয়র সহকারী সচিব) সরওয়ার কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ৪ ঘণ্টা পর ক্যাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ শুরু করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, দুই হাজারের বেশি ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। কীভাবে আগুন লেগেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

অন্যদিকে, শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, রান্না ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবেই জানা গেছে। নাশকতার বিষয়টি উড়িয়ে না দিয়ে তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও কলিমুল্লাহ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ও রোববার সকালে কয়েকটি ছোটখাট ঘটনা ঘটেছে আমাদের ক্যাম্পে।আমরা আশঙ্কা করছি সন্ত্রাসীরাই আগুন দিয়েছে আমাদের ক্যাম্পে।

এর আগেও একই ক্যাম্পে ২০২১ সালের ২২ মার্চ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় ১১ জনের মৃত্যু, ৫ শতাধিক আহত হয়। পুড়ে গিয়ে ছিল ৯ হাজারের বেশি ঘর।

Link copied!