নৌকা বাইচে জেগে উঠেছিল বুড়িগঙ্গার দুই তীর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, ১০:০৯ পিএম

নৌকা বাইচে জেগে উঠেছিল বুড়িগঙ্গার দুই তীর

সারি সারি নানা নাম ও আকারের সাজানো নৌকা। কোনোটার নাম কালাচাঁন রকেট তো কোনোটা বা শেখ বাড়ি। এসব নৌকার মাঝি ও মাল্লারদের সুঠাম দেহে শোভা পাচ্ছে রঙিনসব পোশাক। নৌকায় নৌকায় বাজছে ঢাক-ঢোল-খমক। সেই ঢাক-ঢোলের ছন্দে মাঝি-মাল্লারদের বৈঠা নামছে আর উঠছে বুড়িগঙ্গার অথৈ জলে। ছলাৎ ছলাৎ ছলাৎ। এ এক নয়নাভিরাম দৃশ্য।

জনমানুষকে স্বাগত জানাতে আয়োজনের কমতি ছিল না। ছবি তুলেছেন দ্যা রিপোর্টের ফটোগ্রাফার শবনম শারমিন। 

আবহমান বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ও শতবর্ষের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ নৌকা বাইচের এমন স্বর্গীয় দৃশ্য দেখতে নদীর দুই তীরে নেমেছিল দর্শনার্থীর ঢল। এমনই এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার উদযাপিত হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী। আয়োজনটি করেছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। এদিনের নৌকা বাইচে মোট ১১টি দল অংশ নেয়। ৬০ মাঝি বিশিষ্ট নৌকা বাইচে শেখবাড়ী দল প্রথম, সোনারতরী দল দ্বিতীয় এবং জয় বাংলা দল তৃতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ১২ মাঝি বিশিষ্ট নৌকা বাইচে মারুফ খানের দল প্রথম, হামিদ আলীর দল দ্বিতীয় এবং  খায়রুল ইসলামের দল তৃতীয় হয়।

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত নৌকা বাইচে সেজেছিল লঞ্চগুলোও। ছবি তুলেছেন শবনম শারমিন।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা। একে আরো বড় পরিসরে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই ধরনের আয়োজন নৌকা বাইচের পুরনো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলীয়  প্রতীক নৌকা। এই নৌকার জন্য নদীপথকে ও নদীকে রক্ষা করতে হবে, নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এই আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, নদীকে দূষণ মুক্ত না রাখলে নদী রক্ষা করা যাবে না। তবে শুধুমাত্র নদী নয়, ঢাকা শহরের খাল ও লেকগুলোকে দখলমুক্ত করার জন্য সিটি কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে হাতিরঝিল থেকে কালাচাঁনপুর, বনানী ও কড়াইলসহ মোট ৯টি ব্রিজকে উঁচু করে নৌকা চলাচল উপযোগী করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরের চেহারা বদলে যাবে।

শবনম শারমিনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসা দর্শকদের একাংশ। 

নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শেষে বিকেলে কামরাঙ্গীরচরের শেখ জামাল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় পুরস্কার বিতরণ ও সুধী সমাবেশ হয়। অনুষ্ঠানে অন‍্যান‍্যের মধ‍্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, সংসদ সদস‍্য হাজী মো. সেলিম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুলতান আব্দুল  হামিদ এবং বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম‍্যান কমডোর গোলাম সাদেক।

অনুষ্ঠান শেষে লেজার শো এবং ফানুস উড়ানো হয়।

Link copied!