রবিবার থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান ফটক বন্ধ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৯, ২০২২, ০৪:২২ এএম

রবিবার থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান ফটক বন্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, মারামারির পর ঘটনা দেশের শীর্ষ আদালত চত্বরে ছড়িয়ে পড়ায় নড়েচড়ে বসেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এ ঘটনায় বিচারক, বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীদের নিরাপত্তায় আদালত অঙ্গনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটক বন্ধ থাকবে। তবে মাজার গেট সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে।

শনিবার মূল প্রবেশপথসহ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ পরিদর্শনের পর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে বৈঠক করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সসংলগ্ন মসজিদ গেট সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত থোলা থাকবে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলসংলগ্ন গেট দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে শুধু গাড়ি বের হতে পারবে। তবে এ গেট দিয়ে কোনো গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির বিপরীত পাশে অবস্থিত গেটটি সার্বক্ষণিক বন্ধ থাকবে।

আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের কোন ফটক কখন বন্ধ বা খোলা থাকবে সে বিষয়ে পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ(শনিবার) সকালেও প্রধান বিচারপতি কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে রবিবার থেকে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। তবে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে আদালতে প্রবেশ করতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে।

এর আগে, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমানের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা আদালত প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, শাহবাগ থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের জেরে ছাত্রদলের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সময় বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের কয়েক শ নেতাকর্মীকে সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে অবস্থান নিতে দেখা যায়। দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের মাজারের সামনে থেকে ছাত্রদলের একটি মিছিল মাজার গেট দিয়ে বের হয়ে দোয়েল চত্বরের দিকে যেতে চাইলে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়।

উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের হাতে লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক ও রড দেখা যায়। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার এক পর্যায়ে ছাত্রদলের একটি গ্রুপ পিছু হটে সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে ঢুকে পড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

ওই ঘটনার পরপরই সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসে। নিরাপত্তা বিষয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সভা শেষে বিভিন্ন নির্দেশনাও দেন তিনি।

Link copied!