শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৫, ২০২২, ০২:৪১ এএম

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

আজ পবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমা। দেশ ও দেশের বাহিরের বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পুর্ণিমা  সাড়ম্বরে উদযাপন করবেন। 

বুদ্ধ পূর্ণিমা হচ্ছে বৌদ্ধ  ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম উৎসব। এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়।বৈশাখী পূর্ণিমা দিনটি বুদ্ধের ত্রিস্মৃতি বিজড়িত। এই পবিত্র তিথিতে বুদ্ধ  জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বোধি বা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। এই দিনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীগণ স্নান করেন, শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকেন।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম দেওয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে, পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় বোধি বৃক্ষতলে জগৎ আলোকিত করে মানবমুক্তির পথ বের করেন মহামতি গৌতম। লাভ করেন বুদ্ধত্ব। কপিলাবস্ত্ত থেকে শ্রাবস্তী, বৈশালী, চুনার, কৌশাম্বী, কনৌজ, মথুরা, আলবী (বর্তমান নেপাল, ভারত, ভুটান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান) প্রভৃতি বহু জায়গায় তিনি ৪৫ বছর ধর্মপ্রচার করেন। জীবনের শেষ অধ্যায়ে তিনি রাজগৃহ থেকে কুশীনগর গমন করেন। কুশীনগরের কাছে পাবা নগরে উপস্হিত হয়ে তিনি গুরুতর অসুস্হ হয়ে পড়েন। তিনি মল্লদের শালবনে শালগাছের নিচে শয়ন করেন। তখন আকাশে বৈশাখী পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে। আলোয় চারদিক উদ্ভাসিত। অনন্ত আকাশের তলে যুগ্ম শালবৃক্ষের নিচে সমবেত শিষ্যগণ। তিনি উচ্চারণ করেন মহাবাণী, উত্পন্ন দ্রব্য মাত্রেরই বিনাশ অবশ্যম্ভাবী, অপ্রমত্ত হয়ে কর্তব্য সম্পাদন কর। বৈশাখী পূর্ণিমাতেই ৮০ বছর বয়সে বুদ্ধ লাভ করেন মহাপরিনির্বাণ।

অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বুদ্ধ পূর্ণিমা যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতি বছরই পালিত হয়। বৌদ্ধধর্মের উৎসব হলেও ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সর্বসাধারণের জন্য এই দিনটি সরকারি ছুটি থাকে। প্যাগোডায় প্যাগোডায় চলতে থাকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দিবস উদ্‌যাপনের যাবতীয় কার্যক্রম। এছাড়া বিভিন্ন গ্রাম ও বিহারে এই দিনে মেলা বসে। সবচেয়ে বড় মেলাটি বসে চট্টগ্রামের বৈদ্যপাড়া গ্রামে, যা বোধিদ্রুম মেলা   নামে সমধিক পরিচিত।

বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে রাজধানীসহ দেশ জুড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে পুদ্ধ পূজা, প্রদীপ প্রজ্বালন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনাসভা, প্রভাত ফেরি, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনাসভা ও বুদ্ধ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মানব জাতির সর্বাঙ্গীন শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Link copied!