যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাবে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
সম্প্রতি প্রকাশিত এডিবির জুলাই সংস্করণের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে বলা হয়েছে, রপ্তানি ও শিল্প খাতের ধীরগতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে। এসব কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ধরা হয়েছে, যদিও নির্দিষ্ট হারে প্রবৃদ্ধির তথ্য জানানো হয়নি।
জুলাই সংস্করণে দেশভিত্তিক নির্দিষ্ট জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস দেওয়া না হলেও আঞ্চলিক বিশ্লেষণে সামগ্রিক প্রবণতা তুলে ধরা হয়েছে। তবে গত এপ্রিলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যা পরে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। আগামী ১ আগস্ট থেকে এই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আছে বাংলাদেশ।
এই শুল্ক কার্যকর হলে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কর দিতে হবে। উদ্যোক্তারা আশঙ্কা করছেন, এতে রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে এডিবি জানিয়েছে, বিদায়ী অর্থবছরে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। বৈশ্বিক পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা এবং কড়াকড়ি আর্থিক ও রাজস্ব নীতির কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে। তাই ২০২৬ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এপ্রিলের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতি কমে ৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
বাংলাদেশ তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভব করছে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছায়, যা ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। টানা সাত মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকার পর গত পাঁচ মাসে তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।