নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ১১:৪১ এএম
বিমানের টিকিট বিক্রিতে দুর্নীতি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় আর যাত্রী হয়রানি ঠেকাতে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার। এসব অপরাধে এখন থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সংশোধিত দুইটি অধ্যাদেশের খসড়ায় উপদেষ্টা পরিষদের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, টিকিট বিক্রি ঘিরে বহুবছরের অনিয়ম বন্ধে বিদ্যমান আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। অবৈধ টিকিট বেচাকেনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, কৃত্রিম সংকট তৈরি, তৃতীয় দেশের টিকিট বিপণন—এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে। এমনকি গ্রুপ বুকিংয়ের পর যাত্রীর তথ্য বদলের চেষ্টাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
শেখ বশির উদ্দীন বলেন, কোনো এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রতারণা বা আর্থিক অসঙ্গতির প্রমাণ মিললে তাদের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিলের ক্ষমতা পাবে সরকার। প্রয়োজনে অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর সাময়িক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হবে।
নতুন আইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি ব্যবস্থা চালু করবে—মানি লন্ডারিং, টিকিট মজুতদারি ও অবৈধ লেনদেন ঠেকাতেই এসব উদ্যোগ। অভিবাসী কর্মীদের অধিকাংশ যাত্রা আকাশপথ নির্ভর হওয়ায় তাদের সুরক্ষা রাখাকেই এই সংশোধনের মূল লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
এ ছাড়াও প্রথমবারের মতো ‘যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণ’কে আইনের প্রস্তাবনায় যুক্ত করা হয়েছে। টিকিট বিতরণে স্বচ্ছতা আনার জন্য জিডিএস, এনডিসি ও এপিআই-ভিত্তিক ডিজিটাল ব্যবস্থার নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হবে। পাশাপাশি এয়ার অপারেটরদের ট্যারিফ দাখিল ও মনিটরিং, টেকসই জ্বালানি ব্যবহার এবং একটি বিমান চলাচল অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের বিধানও থাকছে।
উপদেষ্টা বলেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বিমান পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা, জবাবদিহি ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে। যাত্রীসেবা হবে আরও আধুনিক ও নিরাপদ, আর অভিবাসী কর্মীরা পাবেন তাদের প্রাপ্য সুরক্ষা।