জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এর উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জনে সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ।
রবিবার বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের অংশীদারিত্ব উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি তুলে ধরার এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অর্জনের স্বীকৃতি দেওয়ার এবং ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণামূলক ছবি প্রদর্শন করা হয়। এবিষয়ে পরে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ড্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, "বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় বিশ্বের অন্যতম দরিদ্রতম দেশ থেকে ২০১৫ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের অন্যতম হিসেবে এই যাত্রায় অংশীদার হতে পেরে গর্বিত এবং আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিখেছি যে, উন্নয়ন কীভাবে কাজ করে।"
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশ অচিন্তনীয় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) বলেন, “কোডিড-১৯, ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসন, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশকে এর উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
প্রসঙ্গত, গত পাঁচ দশকের অসাধারণ যাত্রায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অবিচল অংশীদার ছিল। ১৯৭২ সালের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সদস্য হয়। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক প্রথম প্রকল্প হাতে নেয়, যার মাধ্যমে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পরিবহণ ও যোগাযোগ, কৃষি ও শিল্পের পুন:প্রতিষ্ঠা এবং নির্মাণ ও বিদ্যুৎ খাতের সহায়তার জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি পুনরুদ্ধার ঋণ দেওয়া হয়। একই সময়ে বিশ্বব্যাংক ৪টি প্রকল্প পুনরায় চালু করে, যা স্বাধীনতার আগে অনুমোদিত হয়েছিল।
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রমে ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) আওতায় অনুদান, সুদবিহীন ঋণ এবং নমনীয় ঋণ হিসেবে প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।