প্রকৃতিকে আপন করে নিয়েছে যে শহরগুলো

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ২১, ২০২৩, ০৭:৩৬ পিএম

প্রকৃতিকে আপন করে নিয়েছে যে শহরগুলো

উত্তর পশ্চিম ব্রাজিলের শহর কিউরিছিবা। সংগৃহীত ছবি

শহরের ছাদে মৌচাক বা ফরেস্ট চ্যানেলগুলো শহরের কেন্দ্রে শীতল বাতাস টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এমন উদ্ভাবনী ধারণাগুলি সারা বিশ্বের কিছু শহরকে নিয়ে আসছে প্রকৃতির কাছাকাছি। 

বিশ্বে এমন ছয়টি শহর আছে যেখানে রয়েছে প্রকৃতির সুবাস-

ইংল্যান্ডের লিভারপুল (living wall of Liverpool)

এখানে একটি প্রাচীর রয়েছে। স্তরে স্তরে গাছপালা সাজানো। এই প্রাচীরকে জীবন্ত প্রাচীর বলে আখ্যা দিয়েছে বিবিসি আর্থ। লিভারপুল শহরটি শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রকৃতিকে জায়গা করে দিয়েছে। সেন্ট জনস শপিং সেন্টারের অনুর্বর কংক্রিটের ২১৩ ফুট বাইরের অংশটিকে সবুজের আবাসস্থলে রূপ দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে লিভারপুলের জীবন্ত প্রাচীরে ১৪,০০০ চিরসবুজ গাছ রোপন করা হয়েছে। শহরের কাছাকাছি একটি বাস স্টেশন থাকায় সেই বাস স্টেশনের কারণে সৃষ্ট দূষণ কমিয়ে আনতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে এই জীবন্ত প্রাচীর।

২০২১ সালে, সেখানে দুটি মৌচাক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই চাক থেকে প্রথমবার ১৮০ জার মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। শুধু কি তাই? মৌমাছিরা জীবন্ত প্রাচীরকে পরাগায়নের পাশাপাশি আশেপাশের পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বাস্তু সংস্থানের সক্রিয়ভাবে সাহায্য করে।


 

কিউরিছিবা, ব্রাজিল
কিউরিছিবা, উত্তর পশ্চিম ব্রাজিলের একটি শহর। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সমস্যা মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ১৯৭০ সাল থেকে নগর পরিকল্পনাবিদরা একটি টেকসই মডেলকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। অলস পড়ে থাকা জায়গাগুলোকে কাজে লাগানো এবং রিসাইক্লিং এখন শহর পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।

শুধুমাত্র ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সরকারের বনায়ন পরিকল্পনায় রাস্তার পাশে, পার্ক, স্কয়ার এবং অন্যান্য পাবলিক প্লেসে বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে প্রায় ১,৩৯,০০০।

বৃহৎ ভাবে বনায়ন সম্ভব নয় এমন দশটি এলাকায় ‍‍‘মিনি-ফরেস্ট‍‍’ ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অধিক বৃষ্টিপাত, বন্যার বিবেচনায় পরিবেশগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়গুলোও বাস্তবায়িত করা হয়েছে৷
 

সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া

‍‍`প্রকৃতির একটি শহর‍‍` হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরে ইতিমধ্যেই ৪০০ টিরও বেশি পার্ক এবং চারটি প্রকৃতি সংরক্ষণাগার রয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এটি ৩০০ হেক্টরে বৃদ্ধি পাবে।

২০৩০ সালের মধ্যে, সিঙ্গাপুর এক মিলিয়ন গাছ লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার জনগণকে। এছাড়াও পার্ক সমূহের মোট জায়গা ২০২০ সালের তুলনায় আরও ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ২০৩০ সাল নাগাদ সবুজায়িত এলাকা সকল পরিবারের জন্যে দশ মিনিটের হাঁটার দূরত্বে থাকবে।
 

ইজমির, তুরস্ক

মধ্য এশিয়ার দেশ তুরস্কের শহর ইজমির স্থাপন করেছে “মাভিসেহির পেইনিরজোগ্লু স্ট্রিম ইকোলজিক্যাল করিডোর”। এর মাধ্যমে শহরটির দিয়ে দূষণ কমানোর আশা করা হচ্ছে। এটি একটি ২৬,৫০০ বর্গ মিটার উদ্ভিদ বেষ্টিত সবুজ এলাকা। ২০২০ সালের অক্টোবরে উন্মুক্ত করা এলাকাটিতে অতিরিক্ত ১১৫০ টি গাছ এবং ২,৫০,০০০ গুল্ম রোপণ করা হয়েছে। সকল প্রজাতিই ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর জন্য উপযুক্ত৷
 

সৌউল, দক্ষিণ কোরিয়া

তীব্র তাপ প্রবাহ থেকে রক্ষা পাওয়ার আশায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সৌউল শহরে আস্ত একটি বন গড়ে তোলা হয়েছে। আড়াই কোটিরও বেশি লোকের বসবাস এই শহরে। একাধারে এটি একটি মেগাসিটি আবার সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলির মধ্যে একটি।

এখানে একটি নতুন পার্কের পরিকল্পনা উন্মোচন করা হয়েছে, যার নাম ‍‍`ফরেস্ট অব উইন্ডস‍‍`। সরাসরি শহরে শীতল বাতাস আনার জন্য এই পার্কের ডিজাইন করা হয়েছে। এই ফরেস্ট অব উইন্ডস দূষণকারী কণা এবং সূক্ষ্ম ধূলিকণাও আটকে রাখবে।
 

দ্য হাই লাইন, নিউ ইয়র্ক সিটি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের পশ্চিম দিকে ‘দ্য হাই লাইন’ হলো একটি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ হুইলচেয়ার চলাচল করতে পারে এমন পাবলিক পার্ক। পার্কটি অব্যবহৃত রেললাইনের একটি উঁচু অংশের অবশিষ্টাংশ বরাবর নির্মিত।

হাই লাইনটি ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে দ্য হাই লাইন উন্মুক্ত করা হয়েছে।, এই স্থানটি ১,৫০,০০০ ফুল, গুল্ম এবং গাছ সমন্বিত একটি শহরের গ্রিনওয়ে।

Link copied!