উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রেই ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেল অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টিকে অনুমোদন দিয়েছেন। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অ্যাসাঞ্জ এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চাইলে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। এর আগে মানুষিক স্বাস্থ্য বিবেচনায় অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের আবেদনটি বাতিল করে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রসচিবের আদেশ পাবার পর উইকিলিকস আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা বলেছেন, “আমার স্বামী কোন অন্যায় করেনি, তিনি কোন অপরাধ করেননি। তিনি একজন সাংবাদিক এবং প্রকাশক; নিজের দায়িত্ব পালন করার কারণেই তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।”
কোন সূত্রের উল্লেখ না করে ২০১০ এবং ২০১১ সালে ইরাক এবং আফগানিস্তান যুদ্ধের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন গোপন তারবার্তা ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসেন অ্যাসাঞ্জ। উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্যে জানানো হয়, ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় কিভাবে মার্কিন সৈন্যরা নিষ্ঠুরভাবে ৬৬ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে এবং বন্দিদের ওপর নিষ্ঠুরভাবে অত্যাচার করেছে। যুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে যেসব তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করা হয়নি, উইকিলিকস সেসব তথ্যই তুলে ধরে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ওই তথ্যগুলো ফাঁস করে দিয়ে আইন ভেঙ্গেছেন অ্যাসাঞ্জ। এরপর থেকেই অ্যাসাঞ্জকে খুঁজে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র। আইন ভঙ্গের অভিযোগে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগ দায়ের করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে অ্যাসাঞ্জের।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, “অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরানোর বিষয়টি নানা সমালোচনার জন্ম দিতে পারে- এমন সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কোন কিছু হবে বলে মনে করা হচ্ছে না।”
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ দীর্ঘদিন লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে বন্দি আছেন। এর আগে ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সালে গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত তিনি লন্ডনের ইকুয়েডেরিয়ান দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। সেখান থেকে লন্ডন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ইকুয়েডেরিয়ান দূতাবাস তার রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করে। চলতি বছরের ২৩ মার্চ বেলমার্শের কারাগারেই তিনি দীর্ঘদিনের বান্ধবী স্টেলা মরিসকে বিয়ে করে আলোচনায় আসেন।