কানাডা-মেক্সিকোর পণ্যে ২৫% শুল্ক বসছে, ট্রাম্পের হুমকি শনিবার থেকেই কার্যকর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ৩১, ২০২৫, ০২:১৯ পিএম

কানাডা-মেক্সিকোর পণ্যে ২৫% শুল্ক বসছে, ট্রাম্পের হুমকি শনিবার থেকেই কার্যকর

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের যে হুমকি তিনি দিয়ে রেখেছিলেন, তা কার্যকর হতে যাচ্ছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকেই প্রতিবেশী ওই দুই দেশের পণ্য সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকলেই ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে।

তবে এই শুল্কের আওতায় ওই দেশগুলো থেকে আমদানি করা তেলও অন্তর্ভুক্ত হবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের এসব বলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত দিয়ে ব্যাপকহারে অনিবন্ধিত অভিবাসীর প্রবেশ ও ফেন্টানিলের প্রবেশ রোধ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতেই এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।

চীনের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

“চীন আমাদের দেশে ফেন্টানিল পাঠাচ্ছে, যার কারণে হাজার হাজার আমেরিকান মারা পড়ছে। এ কারণে চীনকেও শেষ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হবে, এটা করার প্রক্রিয়ায় আছি আমরা,” বলেন রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট।

নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেও হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর পরই এ সংক্রান্ত কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে তার প্রশাসনকে বিষয়টি পর্যালোচনা করতে বলেছেন।

ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে যেভাবে চীনের ওপর একের পর এক শুল্ক আরোপ করেছিলেন তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের আমদানি মোটামুটি একই পর্যায়ে রয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে চীনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিশ্ব বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাম না নিয়ে বলেন, ট্রাম্প ফিরে আসায় বিশ্ব অর্থনীতির দুই শীর্ষ শক্তির মধ্যে ফের বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে চীনের ভাইস প্রিমিয়ার ডিং শুয়েশিয়াং জানান, বেইজিং বাণিজ্য উত্তেজনা নিরসনে ‘উইন-উইন’ সমাধান খুঁজছে এবং আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

এদিকে কানাডা ও মেক্সিকো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। একইসঙ্গে তারা সীমান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিয়ে ওয়াশিংটনকে আশ্বস্ত করারও চেষ্টা করছে।

বিবিসি লিখেছে, যদি কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা তেলে ট্রাম্প শুল্ক বসান, তাহলে তা মার্কিনিদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। অথচ নির্বাচনী প্রচারে তিনি এ ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

শুল্ক আরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্দেশ্য হলো, মানুষ সস্তা দেশীয় পণ্য কেনার দিকে ঝুঁকবে, যা অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে চাঙা করবে।

কিন্তু আরোপ করা শুল্কের খরচ শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের ওপরই পড়ে। ভালো বিকল্প না থাকলে, পেট্রোল থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সামগ্রী- সব কিছুরই দাম বেড়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে পরিশোধন করা তেলের প্রায় ৪০ শতাংশই আসে আমদানি থেকে, যার সিংহভাগই জোগায় কানাডা।

Link copied!