চলমান কূটনৈতিক বিরোধের মধ্যেই ‘প্রক্রিয়াগত কারণ’ দেখিয়ে কানাডার নাগরিকদের সব ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে ভারত সরকার। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোনো ভিসা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে দেশটি।
ভিসা আবেদন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বিএলএস ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে দেয়া এক পোস্টেও বলা হয়েছে, প্রক্রিয়াগত কারণে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কানাডার নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা পরিষেবা স্থগিত থাকবে।
শিখ নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার মৃত্যুর বিষয়টি থেকে সৃষ্ট এই বিরোধের উত্তেজনার মধ্যেই বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) কানাডাতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর হামলায় সুখদুল সিং নামে এক খালিস্তানপন্থি শিখ নেতার মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি কানাডার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ভারতের পাঞ্জাবের জেলা শহর মোগার ‘ক্যাটাগরি এ’ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন সুখদুল সিং। ২০১৭ সালে জাল পাসপোর্টে কানাডায় পালিয়ে যান। কানাডায় খালিস্তান আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা সুখা দুনেকি নামেও পরিচিত। খালিস্তানপন্থি নেতা অর্শদীপ দাল্লার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন সুখদুল সিং।
বুধবার খালিস্তান এবং কানাডার সাথে সম্পৃক্ত ৪৩ জন ‘গ্যাংস্টারের’ তালিকা প্রকাশ করে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা এনআইএ। সে তালিকায়ও নাম রয়েছে সুখদুল সিংয়ের।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, খালিস্তানি ‘সন্ত্রাসী’ সুখদুল সিং নিজ দলের প্রতিপক্ষের সহিংসতায় নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সুখদুল সিংকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন কারাবন্দী আলোচিত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণুই।
এক শিখ নেতা হত্যার বিষয় নিয়ে ভারত ও কানাডার প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের মধ্যেই আরেক শিখ নেতাকে হত্যার এই ঘটনা দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ আরও বাড়িয়ে দিবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কেন না এরই মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ভারত-কানাডার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি শিখ মন্দিরের বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় মুখোশধারীদের গুলিতে নিহত হন হারদীপ সিং নিজ্জার। ভারতে শিখদের আলাদা খালিস্তান রাষ্ট্রের দাবির আন্দোলনের অন্যতম বড় নেতা ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক হারদ্বীপ।