ভারত-কানাডা সম্পর্ক অবনতির নেপথ্যে খালিস্তান আন্দোলন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩, ০৯:১৭ এএম

ভারত-কানাডা সম্পর্ক অবনতির নেপথ্যে খালিস্তান আন্দোলন

সংগৃহীত ছবি

খালিস্তানি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভারত-কানাডা সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। গত জুনে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতের যোগসাজশের অভিযোগ এনে সে দেশের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে কানাডা।

ভারতও মঙ্গলবার দিল্লিতে নিযুক্ত কানাডার এক কূটনীতিককে পাল্টা বহিষ্কার করে। এর ফলে দুই দেশের সম্পর্কে এখন তলানিতে ঠেকেছে।

গতকাল কানাডার পার্লামেন্টে ট্রুডো বলেন, হরদীপ সিংকে খুনের পেছনে ভারতের হাত থাকার যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ তার সরকারের কাছে রয়েছে। কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রি আরও বলেন,দেশের অভ্যন্তরে কানাডার এক নাগরিককে এভাবে হত্যা করা, বিদেশিদের এমন প্রত্যক্ষ যোগসাজশে কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।

ওই অভিযোগের পরই কানাডায় অবস্থানরত এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করে কানাডা।

যুক্তরাষ্ট্র এই ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, ‘আজকে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যে অভিযোগগুলো করেছেন তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা কানাডার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। কানাডার তদন্ত এগোচ্ছে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

তবে এই ইস্যুতে ব্রিটেন সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি।

যোগ দিতে ভারত সফরে এসে খালিস্তান ইস্যুতে মোদির কাছে কথা শুনতে হয়েছিল কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে।

সম্প্রতি মোদি ও ট্রুডো জি২০ সম্মেলনে অবসরে সামান্য কিছু সময়ের জন্য কথা বলেছিলেন। সেখানেও খালিস্তানিদের প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর অভিযোগে ট্রুডোকে বিদ্ধ করেছিলেন মোদি।

বৈঠকে বিস্ময় প্রকাশ করে মোদি বলেছিলেন, কানাডায় ভারতীয় দূতাবাসে একাধিকবার খালিস্তানিরা হামলা চালালেও কানাডার সরকার কারও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। কানাডা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে শামিল হবে বলে মোদি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।

সেই বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমে ট্রুডো বলেছিলেন, কানাডায় সবার চেতনা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার আছে। যে অধিকারকে কানাডা বিশেষ গুরুত্ব দেয়, তা কখনো খর্ব করা যায় না। তবে সরকার হিংসা ও ঘৃণা বরদাশত করে না। 

জানা যায়, কানাডায় গত জুন মাসে খুন হন নির্বাসিত শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর। দেশটির সরকার ওই হত্যার সঙ্গে ভারত সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। এমনকি কানাডায় নিযুক্ত ‘র’ এর ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরই অটোয়ায় নিযুক্ত ওই গোয়েন্দাপ্রধানকে বহিষ্কার করে কানাডা।

গত ১৮ জুন কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের এক শহরতলিতে হরদীপকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এটি কানাডার শিখ অধ্যুষিত এলাকা। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের পর কানাডাতেই সবচেয়ে বড় শিখ সম্প্রদায় রয়েছে।

ভারতের উত্তরাঞ্চল ও পাকিস্তানের কিছু অংশের সমন্বয়ে স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ছিলেন হরদীপ। ভারতে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে নয়াদিল্লি। তবে এ অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

Link copied!