জিয়াউর রহমানের ‘মরণোত্তর বিচার’ দাবি করলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ৯, ২০২২, ০১:১৭ এএম

জিয়াউর রহমানের ‘মরণোত্তর বিচার’ দাবি করলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ  ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কাছ থেকে বর্তমান প্রজন্মকে রাজনীতি ও মানবিকতা শেখার আবহান জানিয়েছেন  আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের ‘মরণোত্তর বিচার’ও দাবি করেন তিনি।

মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে  আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।   

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইই,বি) অডিটোরিয়ামে শেখ পরশের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায়  যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “আগস্টের ট্রাজেডির সবচেয়ে বড় ট্র্যাজিক কুইন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তাঁর সমগ্র জীবনটা অনুসরণ কররে দেখা যায়, তাঁর মত ভুক্তভোগি মানুষ খুব কম আছে। মাত্র ৪ বছর বয়সে বাবা-মা দুইজন হারিয়ে তিনি অনাথ হয়েছেন।”

বঙ্গমাতা অতি সাধারণ জীবন যাপন করতেন উল্লেখ করে শেখ পরশ বলেন, “তাঁর কোন জৌলুশ ছিল না, ছিল না কোন চাকচিক্য, অতি সাধারণ জীবন যাবনে অভ্যস্ত ছিলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি দুইবার মন্ত্রীর স্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী, প্রেসিডেন্টের স্ত্রী, কিন্তু তারপরেও তাঁর চালচলনে ছিল-শাশ্বত বাঙালি মধ্যবিত্ত নারীর আটপৌঢ়ে রূপ। ছিল না কোন লোভ-লালসা বা সখ-আহ্লাদ। জীবনে কোন কিছু আবদার করে নাই স্বামীর কাছে বা শ্বশুরের কাছে।”

শিশুদের প্রতিও বঙ্গমাতার অগাধ উদারতা ছিল উল্লেখ করে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “ শিশুদেরকে তিনি বিশেষ মনোযোগ দিতেন এবং অকৃত্রিম মমত্ববোধ প্রদর্শন করতেন। শিশুদের আবদার এবং বায়নার প্রতি বঙ্গমাতা নজর রাখতেন। শুধু মানুষ নয়, যেকোন পশু-পাশি, জীবজন্তুর প্রতি ছিল তার অগাধ মমত্ববোধ। তিনি বাগান করতেন, কুকুর, কবুতর, মুরগি পোষতেন এবং ওদের যত্ন নিতেন।”

বঙ্গমাতা সর্বক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে সহযোগিতা করেছেন উল্লেখ করে শেখ পরশ বলেন, “জাতির পিতার জীবন সঙ্গিনী হিসাবে তিনি ছিলেন অসাধারণ। এভাবে তিনি নিপীড়িত বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে নেপথ্যে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে। আমদের মুক্তির সংগ্রামে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে আন্দোলন-সংগ্রাম সংগঠিত করেছে। সংকট মুহূর্তে এ ধৈর্য ধরে, মাথা ঠাণ্ড রেখে তিনি সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলো নিতে পেরেছেন।” 

তিনি বলেন, “যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি’র লেখক এবং সাংবাদিক হওয়ার পিছনেও বেগম মুজিবের অবদান অপরিসীম। সুতরাং বেগম মুজিবের চারিত্রিক গুণাবলি থেকে আমাদের প্রজন্মের অনেক কিছু শিক্ষণীয়, বিশেষ করে মানবিকতা এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি যে উদাহরণ রেখে গেছেন তা সত্যি অনুকরণীয়।”

বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীরদর মধ্যে যারা এখনও পলাতক আছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যার অন্যতম হোতা, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ৭৫ এ নির্বিচারে নারী-শিশু হত্যাকাণ্ডের  সাথে জড়িত ছিল, যেটা জাতির কাছে আজ পরিষ্কার। কাজেই জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার আজ এই প্রজনেমর সময়ের এবং নৈতিক দাবি। “

তিনি বলেন, “এই নির্দয় গণহত্যাকাণ্ড যদি আমরা আর মেনে নেই, তাহলে আমরা ন্যায়পরায়ণ এবং মানবিক সমাজব্যবস্থা কায়েম করতে ব্যর্থ হবো এবং তাদের বিপন্ন হবে প্রগতি, বিপন্ন হবে মানবতা। সুতরাং এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং অচিরেই সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।”

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে  যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. হাবিবুর রহমান পবন, এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ।

Link copied!