বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সুনামগঞ্জ ও ছাতকজুড়ে থইথই পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ১৭, ২০২২, ০২:৩১ পিএম

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সুনামগঞ্জ ও ছাতকজুড়ে থইথই পানি

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুরের হাজার হাজার বসত ঘরে বানের পানি ডুকে পড়েছে। সেই সঙ্গে গত ৩দিন ধরে নেই বিদ্যুৎ। সুনামগঞ্জ ও ছাতক শহরজুড়ে এখন থইথই পানি। শহরের এমন কোনো এলাকা ও সড়ক নেই যেখানে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়নি।

পুরো সুনামগঞ্জ শহরের ৯০ ভাগ বসত ঘরে বানের পানি ডুকে পড়েছে। ছাতক  শহরের শতভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক পৌর এলাকার প্রধান সড়কে হাঁটু পানি থেকে কোমর পানিতে ডুবে আছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জের বৃষ্টি থাকলেও উজানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে খুবই বেশি। ফলে নদ-নদীর পানি দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। উজানে বৃষ্টিপাত যদি কমে, তবে এ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে শুরু করে নবীনগর পর্যন্ত পানি আর পানি। কোথাও হাঁটু, কোথাও এর চেয়ে বেশি পানি। কাজীর পয়েন্ট এলাকায় পানি বেশি থাকায় সেখানে নৌকার যাতায়াত করেছেন লোকজন।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সীমান্তের যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৮ দশমিক শূন্য ৫ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উপজেলার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে।

উপজেলার সদর বাজার, সুলেমানপুর বাজার, বালিজুরি বাজার, পাতারগাঁও বাজার, কাউকান্দি বাজার, একতা বাজার, নতুন বাজার ও শ্রীপুর বাজার পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে নিন্মাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে হচ্ছে।

বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্যায় প্লাবিত হয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এসব এলাকার গ্রামীণ ছোট ছোট রাস্তা ঘাট, ব্রীজ, কার্লভাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন  রয়েছে। এদিকে যাদুকাটা নদীর প্রবল স্রোতের তোড়ে বিন্নাকুলী বাজার সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন শাহ আরেফিন(রঃ) ও অদ্বৈত সেতুর গার্ডার ভেঙে পরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
 
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাহান কবির বলেন, প্রবল বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে বর্তমানে তাহিরপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ব্যপক অবনতি দিকে যাচ্ছে।  তাহিরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলায় পর্যটকবাহী সকল নৌযানের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

Link copied!