আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত বামপন্থীদের উদ্দেশে এমনই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে বিরোধীদেরও হুঁশিয়ারি দিতে ছাড়েননি এই সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, “চাইলে আমেরিকার (যুক্তরাষ্ট্র) পুলিশের স্টাইলে আন্দোলন থামাতে বলতে পারি।”
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী। এতে বাম ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার অতি-ডান ও অতি-বাম সরকারের বিরুদ্ধে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার সেই মন্তব্যের সূত্র ধরে এক গণমাধ্যমকর্মীরপ্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আমরা সব সময় মনে করি, অতি বাম খুব প্রোগ্রেসিভ দল, তারা খুবই গণমুখী দল। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, ঠিক আছে তারা আমাকে উৎখাত করবে। পরবর্তীতে কে আসবে, সেটা কি ঠিক করতে পরেছে? সেটা আমার প্রশ্ন, কারা আসবে? কে আসবে? কে দেশের জন্য কাজ করবে? কাকে তারা আনতে চায়? সেটা কিন্তু স্পষ্ট না। আর সেটা স্পষ্ট না বলে তারা কিন্তু তারা কেউই জনগণের সাড়া পাচ্ছে না।”
বিরোধীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের নতুন একটা পথ নেওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমরা যদি আমাদের পুলিশকে বলে দেই, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারে। সেটা করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের পুলিশ আমেরিকান পুলিশকে অনুসরণ করতে পারে। কারণ আমরা তো ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম।”
যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতিবাদ শুধু এখানেই না, আমেরিকায় (যুক্তরাষ্ট্র) বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।”
তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, “কেউ ফিউগেটিভ (পলাতক) হয়ে বিদেশে বসে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন-সংগ্রাম করেই যাচ্ছে। নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। সেখানেও প্রশ্ন আছে। যারা আন্দোলন করার করুন, আমরা তো বাধা দিচ্ছি না।”
শেখ হাসিনা বলেন, “গত বছর ২৮ অক্টোবর আমাদের দেশে আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ হয়েছে, ভাঙচুর হয়েছে। আমাদের পুলিশ এগুলো ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আমাদের এখানে আন্দোলন করছে। আমি বলে দিয়েছি, তারা আন্দোলন করছে, করুক।”
এর আগে চলতি সপ্তাহের সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ছয়দিনের থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সেথ্রা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উভয় সফরের অংশ হিসেবে ২৪ এপ্রিল সেখানে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।