২১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ, পানিবন্দি হাজারো মানুষ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৯, ২০২২, ০৪:২৬ পিএম

২১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ, পানিবন্দি হাজারো মানুষ

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শিক্ষার্থী আসতে না পারায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ২১৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো হাওরবাসীকে।

পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে ‍সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচ উপজেলায় ২১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বৃহস্পতিবার সকালে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “জেলার পাঁচ উপজেলায় শিক্ষার্থী না আসতে পারায় দুই শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র শিক্ষকরাই বিদ্যালয়ে এসে অলস সময় পার করছেন।” পানি কমলে বিদ্যালয়গুলো খুলবে বলেও তিনি জানান।

সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “এসব এলাকায় ৩০টি বিদ্যালয়ে  আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যায় যাদের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে তারা এখানে অবস্থান করছেন।”

স্থানীয় ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। থাকা খাওয়াসহ ভোগান্তিতে পড়েছেন পানিবন্দী মানুষ। বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সবকটি উপজেলার মৎস্য চাষিদের বিপদ আরও বেশি। বন্যায় তাদের মাছের খামার তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসুদ্দোহা বৃহস্পতিবার সকালে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির এখনও উন্নতি  হয়নি। সুনমাগঞ্জ সদরে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। শহরটি এখনও তলিয়ে যায়নি। তবে ভারতে বৃষ্টিপাত বেশি হলে ও জেলায় বৃষ্টিপাত না কমলে শহরটি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাতকে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।”

বন্যা পরিস্থিতিতে কার্যক্রম সম্পর্কে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “আমরা যতদূর  পারছি বন্যা পরিস্থিতিতে কাজ করে যাচ্ছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যতদূর পারি সহায়তা করছি। বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাও বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসছে। জেলা প্রশাসনও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তাা করছে।”

এদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আগামি শুক্রবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মিজোরাম প্রদেশের কতিপয় স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এতে মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি শুক্রবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং সুরমা, কুশিয়ারা, ভোগাই-কংস, ধনু-বাউলাই নদীর পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে দ্রুত বাড়তে পারে। এমতাবস্থায় শুক্রবারের মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Link copied!